ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম – জামায়াতে নামাজ পড়ার নিয়ম

BanglaTeach
E-Haq
Digital Marketer at- BanglaTeach

E-Haq is the founder of BanglaTeach. He is expertise on Education, Health, Financial, Banking,...

Sharing is caring!

ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম
ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম

ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের মধ্যে অধিকাংশ জ্ঞাত আছে। তবে আপনি যদি ইমামেরে পিছনে তথা জামায়াতে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে না জেনে থাকেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। ( সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম এবং নামাজের জন্য সূরা পড়তে হবে।

নামাজ পড়ার গুরুত্ব এবং উপকারিতা অনেক। যা সংক্ষিপ্তে বলে শেষ করার নয়। তবে ইসলাম ধর্মে যেহেতু নামাজ হলো দ্ধিতীয় তম স্তম্ব, আর এটা নাবালক হতে বৃদ্ধ প্রায় সবার জন্যই ফরজ। যে বিধায় কোনো ভাবেই নামাজ ছাড়া যাবে না। আর নামাজের মাধ্যমে আমরা অঢেল নেকি লাভ করতে পারি যা দ্ধারা কবর, হাশর, মিজান মূলত আখিরাতে আমাদের জাহান্নাম থেকে মুক্তির সহায়ক হবে। যাইহোক, এখন আপনাকে আমি প্রশ্ন করি, নামাজের মাধ্যমে কেমন নেকি বা সোওয়াব লাভ করা যায়?  আর জামাতে বা ইমামের পিছনে নামাজ পড়লে কেমন সোওয়াব অর্জন করা যায়? সোওয়াব জিনিসটি মহান আল্লাহ তা’আলাই অবগত আছেন তবে যদি কোনো ব্যক্তি ঘরে বা দোকানে বা একা কোথাও স্থানে নামাজ পড়ে থাকে, তাহলে ঐ ব্যক্তি এক নামাজে ১ নামাজের সোওয়াব লাভ করবে। ( আউয়াবিন নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জানুন )

তাহলে জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত কি? জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত হলো ১ রাকাত নামাজে ২৭ গুণ সোওয়াব লাভ করা যায়। তাহলে এতোক্ষণে আমরা বোঝতে পেরেছি যে, জামায়াতে তথা ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার ফজিলত কেমন। এবার চলুন ক্রমান্বয়ে জেনে নেওয়া যাক জামায়াতে তথা ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে।

ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম

ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম
ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম

যদিও দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম প্রায় সেইম তবে ক্ষেত্র বিশেষে কিছু কিছু ওয়াক্তে তা সামান্যতম ভিন্ন হয়। যেমন যোহর ও আছর নামাজ। তবে বিচলিত হওয়ার কোনো রকম কারণ নেই। কেননা, যোহর ও আছরের নামাজ কিভাবে জামায়াতে পড়তে হয়, সেই দিকটিকেও আলোচনায় নিয়ে আসবো। যাইহোক, এমনিতে স্বাভাবিকভাব বাকি ওয়াক্তের নামাজগুলো কিভাবে সঠিক উপায়ে ইমামের পিছনে পড়বেন? ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম হলো-

  • প্রথমে একজন মুমিন ব্যক্তিকে মসজিদে গিয়ে হুজুরের পিছনে এক সাথে দাঁড়াতে হবে।
  • এরপর ইকামত দেওয়ার পর আপনাকে উক্ত নামাজের নিয়ত বাঁধতে হবে। ( ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে কিবলামুখী হয়ে নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম। )
  • এবার আল্লাহু আকবার বলে কান বরাবর হাত তুলে বুকের নিচে বা নাভির নিচে উভয় হাত ধরতে হবে।
  • এবার আপনাকে ছানা পড়তে হবে। (সুবাহানাকা আল্লাহুমা ওয়া বিহামদিকা ওয়াতাবারা কাসমুকা ওয়া তায়ালাজাদ্দুকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুকা )
  • এবার ইমাম সাহেব সূরা পড়া শুরু করবে। প্রথমে সূরা ফাতিহা এবং এরপর কোরআন থেকে যেকোনো আরেকটি সূরা পড়বেন। এই ক্ষেত্রে কিন্তু আপনারা কোনো করম সাউন্ড করতে পারবেন না। জাস্ট শুনে যাবেন। কেউ কেউ বলে থাকে, সূরা ফাতিহা হুজুরের সাথে পড়ার কথা। অর্থাৎ হুজুর এক আয়াত পড়ে যখন একটু সময় নিবে, তখন আপনি পূর্বের আয়াতখানা পড়বেন। এভাবে সম্পূর্ণ সূরা ফাহিতা পড়বেন।
  • এখন হুজুর অন্য একটি সূরা পাঠক করবে। এখানে আপনাকে অবশ্যই মনোযোগ সহকারে তিলাওয়াত শুনতে হবে। অমনোযোগী কোনো ভাবে ই হওয়া যাবে না।
  • এখই নিয়মটি সাধারণত ফজর, মাগরিব ও এশার নামাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
  • এবার হুজুর যখন তিলাওয়াত শেষ করবেন, তখন প্রথম রুকুতে চলে যাবেন। তখন আপনারাও একই সাথে হুজুর আল্লাহু আকবার বলার সাথে সাথে রুকুতে যাবেন এবং রুকুর তাসবিহ বা দোয়া পাঠ করিবেন অন্তুত ৩বার এবং বেজোড় ভাবে। (সুবহা’না রাব্বিয়াল আ’যীম )
  • তাসবিহ পড়ার পর হুজুর “সামি আল্লাহু লিমান হামিদা” বলে পুনরায় উঠে দাঁড়াবে এবং আপনারাও উঠে দাঁড়াবেন।
  • এবার পুনরায় ইমাম “আল্লাহু আকবার” বলে বসে সিজদায় যাবেন। একই সাথে আপনারাও সিজদায় যাবেন।
  • সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবীহ পাঠ করিবেন। (সুবহানা রাব্বিয়াল আলা)
  • এখানেও আপনারা বিজোড়ভাবে উক্ত দোয়া বা তাসবীহ পাঠ করিবেন।
  • এভাবে পরপর দুইবার সিজদাহ দেওয়ার পর উঠে দাঁড়াবেন। এই অবধি এক রাকাত নামাজ শেষ হলো।
  • এভাবে প্রথম দিকের মতো আবার সূরা ফাতিহাপড়ে এবং অন্য সূরা পড়ে আবার রুকু ও সিজদাহ দিবেন।
  • এবার সিজদা দিয়ে উঠবেন না।
  • যদি দুই রাকাত হয়, তাহলে তাশাহাহুদ, দরুদ পড়বেন ও দোয়া মাছুরা পড়বেন এবং সর্বপরি সালাম ফিরিয়ে নামাজ সম্পূর্ণ করবেন। তবে যদি চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজ হয়ে থাকে, তবে তাশাহাহুদ ও দরুদ পড়বেন এবং পুনরায় ইমাম সাহেবের সাথে দাঁড়াবেন।
  • এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, যখন আপনারা তাশাহাহুদ পড়বেন, তখন আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাললাহু পড়ার সময় ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল উঁচু করে আবার নিচু করে নিবেন।
  • যাইহোক, চার রাকাত হলে হুজুরের সাথে উপরোক্ত উপায় বা নিয়ম অনুসরণ করে ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করতে পারেন।

উপরের নিয়মে আপনি বা আমি সঠিকভাবে জামায়াতে নামাজ বা আদায় করতে পারি। আর যারা যারা তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ সহ ছানা এখনোও না শিখে থাকেন, তাহলে দয়া করে খুব দ্রুত শিখে ফেলুন। এতোক্ষণ আমরা ফরজ, মাগরিব ও এশার নামাজ কিভাবে জামায়াতে বা ইমামের পিছনে নামাজ পড়তে হয়, সে সম্পর্কে জেনেছি। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক যোহর ও আছরের দামাজ ইমামের ফিছনে কিভাবে পড়তেপারি।

ইমামের পিছনে যোহর ও আছরের নামাজ পড়ার নিয়ম

সাধারণত সব ওয়াক্ত নামাজ একইভাবে  ইমামের পিছনে পড়তে হয়, তবে যোহর ও আছরের নামাজের ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। কেমন ব্যতিক্রম? চলুন জেনে নিই। ইমামের পিছনে যোহর ও আছরের নামাজ পড়ার নিয়ম হলো-

  • প্রথমে আপনাকে অন্য ওয়াক্ত নামাজের ন্যায় নিয়ত বাঁধতে হবে এবং হাত বাঁধতে হবে।
  • এরপর ইমাম যখন মনে মনে সূরাগুলো পড়বে, তখন আপনিও মনে মনে সূরা ফাতিহা পড়বেন শুধু।
  • এরপর অন্য নামাজের ন্যায় ইমাম সাহেব রুকু ও সিজদাহ দিবে। আপনিও দিবেন সাথে।
  • মূলত এইটুকুই পার্থক্য। এবং আপনি যদি এই জিনিসগুলো মান্য করেন, তাহলে আপনার নামাজ ইনশাল্লাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে অবশ্যই একবার কোনো অভিজ্ঞ আলেম কিংবা হুজুরের নিকট জিজ্ঞাসা করে নিবেন।

মূলত উপরোক্ত  পদ্ধতি বা নিয়ম অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনিও ইমামের পিছনে যোহর ও আছরের নামাজ পড়তে পারেন। আশা করি এই দুই ওয়াক্ত নামাজ কিভাবে ইমামের পিছনে পড়তে হয়, সে বিষয়ে আপনাদের জ্ঞাত হয়েছে।

ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা

ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা
ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা

ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম বা জামায়াতে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আশা করি আজেকের আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত একটি ধারণা পেয়েছেন। তাই যদি আপনি এতোদিন না জেনে থাকেন যে, কিভাবে সালাত মসজিদে আদায় করতে হয়, জামাতে আদায় করতে হয়, তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য বেশ সহায়হক হবে।

আমাদের সবার উচিত সালাতের সহিত নামাজ আদায় করার চেষ্টা করা। কেননা ইসলামে সালাতে নামাজ আদয়া করার ফজিলত ব্যাপক। কেউই চাইবে না এই সাওয়াব হারাতে। মসজিদুল হারামে নামাজ আদায় করা আরো সাওয়াবের। তবে যেহেতু সৌদি আরবে গিয়ে নামাজ পড়ার আমাদের অনেকের তৌফিক নেই, তাই আমাদের উচিত একা একা নামাজ না পড়ে সালাতে গিয়ে ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা। এতে করে এক দিকে আপনার নামাজ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং অন্যদিকে বেশি সাওয়াব লাভ।

আশা করি কিভাবে জামাতে ইমামের পিছনে নামাজ পড়তে হয় সেই নিয়ম এবং সালাতে নামাজ আদায় করার ফজিলত সম্পর্কে জানতে পেরে আপনারা পাঠকগণ উপকৃত হতে পারবেন।

ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন-উত্তর

ইমামের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ নামাজ না পেলে কী করবেন?

যদি কোনো ব্যক্তি ইমামের সাথে ৪ বা দুই রাকাআত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ এক, দুই, তিন রাকাআত পেল, তার প্রতি আবশ্যক হলো ইমামের সালাম ফিরানোর পরে বাকি রাকাআত সমূহ আদায় করা। সে দ্বিতীয় রাকাআতে সুরা ফাতিহা ও অন্য একটি সুরা মিলিয়ে এরপর প্রথম তাশাহহুদের জন্য বসবে।

ইমামের পেছনে সুরা কিরাত কী পড়তে হবে?

সূরা ফাতিহা পড়তে পারেন। ‍হুজুর এক আয়াত শেষ করে যখন রেস্ট নিবে, তখন আপনি পূর্বের আয়াত মনে মনে পড়তে পারেন। আর বাকি অংশের সূরার তিলাওয়াত মনোযোগ সহকারে শুনবেন। তবে এই নিয়ে নানা রকম মতপার্থক্য রয়েছে। যেমন অনেকে বলে লাগবে না এবং এমন করা নিষিদ্ধ। কেননা, আপনার শুরু করা সূরা বা আয়াত যথাস্থানে পৌঁছার আগেই ইমাম রুকু করে ফেলতে পারে। এবং আপনার কেরাতের ভুল হলে আপনার নামাজ ভেঙ্গে যাবে। কেননা, এর সাহু সেজদা ইমাম দিবেন না। তবে অবশ্যই এই ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ আলেমের নিকট গিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিবেন।

ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আরো জানতে

Leave a Comment