কাক ডাকলে কি হয় ? ইসলাম কি বলে?

BanglaTeach
E-Haq
Digital Marketer at- BanglaTeach

E-Haq is the founder of BanglaTeach. He is expertise on Education, Health, Financial, Banking,...

Sharing is caring!

কাক ডাকলে কি হয়
কাক ডাকলে কি হয়

কাক ডাকলে কি হয় ? কাক ডাকাকে কেন্দ্র করে ইসলামি কি বলে? এই নিয়ে রয়েছে নানা রকম দ্ধিধাগ্রস্থতা আমাদের মধ্যে। আর আপনি যদি এটি নিয়ে সামান্যতম রিসার্চ করেন, তবে দেখতে পাবেন বেশির ভাগ গ্রাম্য মানুষগণ উক্ত জিনিসগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তবে যাইহোক, দিন শেষে প্রশ্নটি আবারও চলে আসে যে, প্রকৃতপক্ষে কাক ডাকলে কি হয়? এটি কি কোনো শুভ লক্ষণ নাকি কারো জন্য অশুভ বার্তা বহন করে? প্রকৃতপক্ষে কাক ডাকলে কি হয় এবং এই বিষয়ে ইসলাম কি বলে এটি জানার পূর্বে চলুন জেনে নিই কাক ডাকলে কি হয়, তা নিয়ে প্রচলিত গ্রাম-বাংলার কিছু কুসংস্কার সম্পর্কে। ( সফটওয়্যার আপডেট দিলে কি হয় এবং ছাত্র জীবনে সফল হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন )

কাক ডাকলে কি হয় তা নিয়ে প্রচলিত কিছু কুসংস্কার

কাক ডাকলে কি হয় তা নিয়ে প্রচলিত কিছু কুসংস্কার

আমাদের গ্রাম-গঞ্জের চাচি-জেঠী, দাদা-দাদীদের মুখে অবশ্যই শুনতে পেয়েছেন যে, কাক ডাকলে বিপদ-আপদ কিংবা অশুভ লক্ষণ প্রকাশ পায়! রীতিমত কাক ডাকা নিয়ে বাংলাদেশ সহ ভারতেও বেশ অনেকগুলো মজার ঘটনা ঘটেছে এবং একে কেন্দ্র করে নানা রকম কথা প্রচলিত রয়েছে। যেমন-

  • কাক পাখি যদি কারো বাড়ির পশ্চিম পাশ হতে ডাকে তাহলে ঐ বাড়ির মধ্যে উন্নতি সাধন হবে।
  • আবার কাক উত্তরে ডাকলে পুত্র সন্তান জন্মদান করবে।
  • কাক বাড়ির পূর্ব দিকে ডাকলে আপনার মনোস্কামনা তথা মনের আশা পূরণ হবে।
  • আবার কাক যদি দক্ষিণ দিক থেকে ডাকে, তাহলে পরিবারের মধ্যে নানা রকম বিবাদের সম্ভাবনা থাকে।

শুধু এগুলোই নয়, বরং কাক ডাকাকে কেন্দ্র করে পাশাপাশি প্রচলিত আরো কিছু কথা রয়েছে। যেমন-

  • কাক যদি উড়ে এসে কোনো বাড়ির গাছে এসে বসে তার নিজের ছায়ায় ঠুকরোয়, তাহলে ঐ বাড়ির মধ্যে অশুভ লক্ষণ থাকে। অর্থাৎ মানুষের মৃত্যুর আশংকা কিংবা কোনো রকম ভয়ঙ্কর ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
  • এছাড়াও কাক যদি মুখে খাওয়া নিয়ে কারো সামনে এসে বসে কিংবা কোনো বাড়ির সামনে এসে বসে, তাহলে ঐ ব্যক্তির মনের আশা পূর্ণ হবে।

আপনি জানলে অবাক হবেন যে, কাক ডাকাকে কেন্দ্র করে ভারতে ”কাক চরিত্র” নামে একটি বইও তৈরি করা হয়েছে। যেখানে কাক ডাকাকে তথা কুসংস্কারকে অন্যতম এক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। চলুন সংক্ষিপ্তে ”কাক চরিত্র” বই হতে কাক ডাকলে কি হয়, সে সম্পর্কে কিছু পয়েন্ট জেনে নিই-

  • যদি দিনের দ্বিপ্রহরে কাক অগ্নিকোণ থেকে ‘অয় অয়’ করে ডাকে, তাহলে খুব দ্রুত শোক সংবাদ পেতে পারেন।
  • দিনের চতুর্থ প্রহরে নৈর্ঋত কোণ থেকে ‘মুর মুর’ শব্দে ডাকলে বাড়িতে চুরি বা আগুন লাগতে পারে।
  • দিনের সপ্তম প্রহরে বায়ু কোণে বসে কাক ‘আহে আহে’ শব্দ করলে রোগ বা মৃত্যু অনিবার্য।
  • দিনের চতুর্দশ প্রহরে নৈর্ঋত কোণ থেকে কাক ‘কা কা’ শব্দ করলে শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হবেন।
  • দিনের চতুর্বিংশতি প্রহরে কাক ‘ওয়া ওয়া’ করলে দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • দিনের পঞ্চবিংশতি প্রহরে কাক নৈর্ঋত কোণ থেকে ‘খায়া খায়ে’শব্দ করলে কাউকে সাপে কাটতে পারে।

উপরোক্ত তথ্যগুলো ছাড়াও আরো বেশ অনেকগুলো প্রচলিত কুসংস্কার গ্রাম বাংলায় বর্তমানেও প্রচলিত রয়েছে। তবে ক্রমান্বয়ে তা কমে আসছে। যাইহোক, এবার চলুন মূল আলোচনায় প্রবেশ করি।

ইসলামে কাক ডাকলে কি হয়

এতোক্ষণ দীর্ঘ আলোচনা পড়ার পর, অবশ্যই এখন আপনার মাথায় শুধু মাত্র একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে আর সেটি হলো- কাক ডাকলে কি হয়? কাক হলো পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে চতুর পাখি এবং তাঁর বিপদে-আপদে সঙ্গীদের সঙ্গ পাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রায় সময় কাক ডেকে থাকে। মূলত ইসলামের সাথে কাক ডাকার কোনো রকম সম্পর্কে নেই। অর্থাৎ মানুষের খারাপ-ভালো, কল্যাণ-অকল্যাণ সহ ইত্যাদির সাথে কাক ডাকার সম্পর্কে নেই। বরং ফতোয়া কাজি খানে আছে যদি কেহ সফরে বের হয়ে কাকের ডাক শুনে অকল্যান হবে মনে করে ফিরে আসে তাহলে সে আল্লাহর সাথে কুফুরি করল।

সুতরাং উপরোক্ত তথ্য থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে, কাকের ডাক শুনে যদি কেউ তাঁর ভাগ্যকে পরিমাণ করে, তাহলে সে কুফরি করার সমান গুণাহ অর্জন করলো। প্রতিটি মুসলিমের ইমান ও আকিদা হলো আমাদের ভালো-খারাপ,শুভ-অশুভ, কল্যাণ-অকল্যাণ সব কিছুর নিয়ন্ত্রক একমাত্র মহান আল্লাহ। আর তাঁর রয়েছে ইলমে গায়েব। অর্থাৎ ভবিষ্যৎ এর সকল কিছু একমাত্র তিনিই জানেন। এই ক্ষেত্রে কাঁক কিভাবে জানবে? সুতরাং কাক ডাকলে তাকে আমরা কখনই ভালো কিংবা মন্দের মাপ-কাঠি হিসেবে বিবেচনা করবো না। অন্যথায় এই ধরনের বিশ্বাস মনে-প্রাণে লালন করা মূলত নিজের ইমান ধ্বংস করার সমতুল্য। ( প্লে স্টোর অ্যাপ ডাউনলোড করুন খুব সহজেই )

আশা করি উপরোক্ত ছোট্র একটি পয়েন্ট হতে আপনারা বোঝতে সক্ষম হয়েছেন যে, প্রকৃতপক্ষে আমাদের জীবনের প্রবাহের সাথে কাক ডাকার কোনো রকম সম্পর্কেই নেই। যে কথাগুলো প্রচলিত রয়েছে, মূলত সেইগুলো মানুষগণ নিজ থেকে বানিয়েছে। বিশেষ করে হাবিল-কাবিল এর দাফন এর ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মানুষগণ একটু বেশি কিউরিয়াস ছিল। কেননা অনেকে ভেবে থাকে যে, সর্বপ্রথম মানুষগণ দাফন বা কবর দেওয়া শিখেছিল কাক হতে। আর তারই ধারাবাহিকতায় এই সময় অবধি নানা রকম কথা ও কুসংস্কার ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে।

কাক ডাকলে কি হয় নিয়ে শেষ কথা

কাক ডাকলে কি হয় নিয়ে শেষ কথা

কাক ডাকলে কি হয় তা সম্পর্কে ইতিপূর্বে আপনারা জেনেছেন এবং কি প্রচলিত সমস্ত কুসংস্কার সহ নানা রকম কথ্য কাহিনীগুলো সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। তবে যাইহোক, যেহেতু আপনারা সবাই কাক ডাকার বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে জানতে চেয়েছেন, তারই প্রেক্ষিতে আজকের সম্পর্ণ আর্টিকেল। যদি আর্টিকেলে একটি সার-সংক্ষেপ দাঁড় করাই, তাহলে প্রথমে বলতে হয়, ইসলাম কিংবা বাস্তবে কাক ডাকার সাথে প্রত্যক্ষ কোনো ঘটনার বিন্দু মাত্র সম্পর্ক নেই।

কাক হলো একটি নিরীহ এবং অতি চতুর পাখি। কিন্তু যুগ যুগ ধরে কাকের ডাক কে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে নানা রকম ভুল কাহিনী। যেমন উদাহরণ সরূপ ধরা যায় ভারতে তৈরি হওয়া বই “কাক চরিত্র”। এভাবে আমাদের সমাজে কাকের ডাক কে কেন্দ্র করে নানা রকম ভুল কাহিনী ও গল্প চলমান রয়েছে। সর্বপরি বলা যায় যে, কাক ডাকলে কি হয় এবং ইসলামে যে এর কোনো রকম ভিত্তি নেই, এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আপনারা উপকৃত হতে পেরেছেন।

কাক ডাকলে কি হয় সম্পর্কে আরো জানতে

Leave a Comment