E-Haq is the founder of BanglaTeach. He is expertise on Education, Health, Financial, Banking,...
দোয়া কুনুত (dua kunut ) বলতে সাধারণত আমরা কি বুঝি? দোয়া কুনুত এর ফজিলত কি? বা কেন এটি মুমিনগণ পড়ে থাকে? এরকম অনেক রকম প্রশ্ন ও উত্তর নিয়েই আজকের আমাদের এই আর্টিকেলটি। এখানে দোয়া কুনুত আরবি সহ দোয়া কুনুত এর বাংলা অর্থ সহ উচ্চারণ তুলে ধরা হয়েছে। ( হাসবিয়াল্লাহু এর ফজিলত ও Durood Sharif Bangal সম্পর্কে জানুন )
দোয়া কুনুত কি? এশার নামাজের পর ৩ রাকাত বিতরের নামাজের ২ রাকাতের পর বসা থেকে উঠে সূরা ফাতিহার পর যেকোনো একটি সূরা পড়ে তাকবীর বলে পুনরায় হাত বেঁধে যে দোয়া পড়ে, সেটিকেই মূলত দোয়া কুনুত বলে।
যাইহোক, চলুন তাহলে দোয়া কুনুত বাংলা, আরবি উচ্চারণ সহ অর্থ জানা যাক।
দোয়া কুনুত – dua kunut or dua qunoot
নিচে দোয়া কুনুত এর বাংলা উচ্চারণসহ অনুবাদ ও পড়ার বিস্তারিত নিয়ম ও মাসয়ালা সম্পর্কে আলোচনা করা হল। আশা করি মনোযোগ সহকারে পড়লে দোয়া কুনুত বিষয়ে সকল ধরনের দ্ধিধা দূর হবে এবং পরিপূর্ণভাবে এর আমল করতে সক্ষম হবেন। ( হাসবুনাল্লাহু এর ফজিলত ও নামাজের জন্য দশটি সূরা সম্পর্কে জানুন )
দোয়া কুনুত আরবি
আমরা যারা যারা শুধু মাত্র দোয়া কুনুত আরবি তে জানতে চাই, তাদের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত আরবি দোয়াটিই হলো দোয়া কুনুত। সেটি হলো-
اَللَّمُمَّ اِنَّ نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ
আর আমাদের পাঠকদের মধ্যে যারা যারা দোয়া কুনুত এর আরবির পর শুধুমাত্র বাংলা উচ্চারণ চাই, তাদের প্রেক্ষিতে দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ হলো-
আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈ’নুকা, ওয়া নাস্তাগ্ফিরুকা, ওয়া নু’’মিনু বিকা, ওয়া নাতাওয়াক্কালু ‘আলাইকা, ওয়া নুছনী আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ’, ওয়া নাতরুকু মাঁই ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকানুসল্লী, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস’আ, – ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা – আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্ফারি মুলহিক্ব।
দোয়া কুনুত বাংলা অর্থসহ
পবিত্র কোরআন সহ হাদিসের অর্থ জানা সবার উচিত। আর একইভাবে নামাজ ও দোয়ায় আমরা কি পড়ছি, তার অর্থের দিকে গুরুত্ব দেওয়াও উচিত। তারই ধারাবাহিকতায় চলুন জেনে নেওয়া যাক দোয়া কুনুত বাংলা অর্থসহ-
হে আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্য চাই। তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ঈমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সকল মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি, অকৃতজ্ঞ হই না। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই দাসত্ব করি, তোমারই জন্য নামায পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি। আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত আশা করি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি। আর তোমার আযাবতো কাফেরদের জন্যই র্নিধারিত।
বেতর নামাজ ও দোয়া কুনুত
বেতর নামাজ ও দোয়া কুনুত খুব কাছ থেকে সম্পর্কিত। অর্থাৎ আমাদের মুসলিমদের অধিকাংশই দোয়া কুনুত শুধুমাত্র বেতরের সালাতে পড়ে থাকি। দিনের অন্য সময় সচারাচর পরি না।
বেতর নামাজ এর সময় তথা তিন রাকাত নামাজের সময় দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব। আমাদের মধ্যে অনেকে দোয়া কুনুত পড়তে পারি না বিধায় তিন বার সূরা ইখলাস পড়ে নেই। তবে এটি সহি পদ্ধতি নয় এবং এটি করা উচিতও নয়। আমরা যখন বিতরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়ি, এর মানে হলো দোয়া করা। এখন সূরা ইখলাস ও দোয়া কুনুত কিন্তু দোয়া সম্মেলিত সূরা নয়। তাই এই বিষয়টিকে অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। ( খতমে জালালী ও খতমে খাজেগান নিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুন )
অনেক হাদীসে এসেছে, বিতরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়া সুন্নাত। তাই যদি কোনো ব্যক্তি দোয়া কুনুত না পেরে থাকে, তাহলে সে যেন খুব দ্রুত উক্ত দোয়াটি শিখে নেয়। তবে এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, যদি কোনো ব্যক্তি উক্ত দোয়া পড়তে বা মুখস্ত না থাকে, তাহলে যেকোনো একটি দোয়া সম্পর্কিত দোয়া পড়লেই ওয়াজিব আদায় করা হয়ে যাবে এবং একই সাথে সেই সালাত সহীহ শুদ্ধ হয়ে যাবে। তাই যদি কোনো ব্যক্তি দোয়া কুনুত না পেরে থাকেন, তাহলে যদি দ্রুত সম্ভব, উক্ত দোয়া মুখস্থ করার চেষ্টা করুণ।
দোয়া কুনুত এর ফজিলত
দোয়া কুনুত এবং বেতরের নামাজের সাথে এর সম্পর্ক সহ ইত্যাদি সম্পর্কে উপরে জেনেছি। এবার চলুন দোয়া কুনুত এর ফজিলত সম্পর্কে জানা যাক।
আবু দাউদ এবং আহমদ বিন হাম্বল এর বর্ণনা থেকে জানা যায় হাসান ইবনে আলী (রাঃ) এই দোয়াটি মুহাম্মাদের (সাঃ) কাছ থেকে শিখেছিলেন । দাউদ (রঃ) আরও বলেছেন যখন মুসলমানদের উপর কোন বিপদ-আপদ এবং বিপর্যয় আসতো তখন মহা নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) দোয়া কুনুত পড়তেন । – মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা (৬৯৬৫)
যখন বান্দা দোয়া কুনুত পড়ে, তখন মহান আল্লাহ তা’আলা বান্দার দোয়া কবুল করে নেন। আর যখন আমরা নামাজে দাড়িয়ে মহান আল্লহার নিকট আনগত্য স্বীকার করি, তখন এর থেকে বড় চাওয়া আর কি বা হতে পারে!
আর যখন নামাজে দোয়া কুনুত পড়ে দোয়া করি, তখন মহান আল্লাহ আমাদের কে ক্ষমা করে দেন, আর এর থেকে কি বড় আর কোনো ফজিলত থাকতে পারে? সুতরাং দোয়া কুনুত এর ফজিলত বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
দোয়া কুনুত কত প্রকার? অথবা দোয়া কুনুত কয়টি ও কি কি
সাধারণত আমরা অনেকে এই প্রশ্নের উত্তরটি জানতে চাই যে, দোয়া কুনুত কয়টি ও কি কি? আর সেই প্রেক্ষিতে আজকের আর্টিকেলে আমরা বলতে যাচ্ছি যে, দোয়া কুনুত কত প্রকার। যাইহোক, সাধারণত দোয়া কুনুত হলো ২ প্রকার। আর সেগুলো হলো-
- কুনুতে রাতেবা
- কুনুতে নাজেলা
মূলত উপরের এই দুই প্রকারই হলো দোয়া কুনুত । আশা করি যারা যারা দোয়া কুনুত এর প্রকারভেদ নিয়ে জানতে চেয়েছেন, তারা উপযুক্ত উত্তর পেয়েছেন।
দোয়া কুনুত নিয়ে সার্চকৃত কিছু পাবলিক টার্ম
ইন্টারনেটে অহোরোহ দোয়া কুনুত সম্পর্কে জানতে চেয়ে মানুষগণ সার্চ করে থাকে। আর তাদের সার্চকৃত টার্ম এ রয়েছে নানা রকম ভিন্নতা। চলুন দোয়া কুনুত – dua kunut নিয়ে সার্চ করা বেশ কিছু টার্ম সম্পর্কে জানা যাক।
- দোয়া কুনুত
- dua kunut
- dua qunoot
- doa qunut
- dua qunoot bangla
- দোয়া কুনুত ডাউনলোড pdf
- দোয়া কুনুত আরবি
- দোয়া কুনুত কত প্রকার?
উপরের তথ্যগুলো ছাড়াও আরো অনেকগুলো সার্চ টার্ম ব্যবহার করে মানুষগণ দোয়া কুনুত সম্পর্কে জানতে চায়। যাইহোক, চলুন দোয়া কুনুত নিয়ে আরো বেশ কিছু তথ্য জানা যাক।
দুআ কুনুতের ঐতিহাসিক ঘটনা
মূলত দোয়া কুনুত নিয়ে রাসূল সাঃ এর কিছু ঘটনা রয়েছে। চলুন সেটা জেনে নিই-
আহমদ বিন হাম্বল, মুহাম্মাদ ইবনে ইসা আত-তিরমিজি এবং আবু দাউদের বর্ণনা থেকে জানা যায়, হাসান ইবনে আলী রাঃ এই দোয়াটি মুহাম্মাদের (সা.) কাছ থেকে শিখেছিলেন। দাউদ আরো বলেছেন যখন মুসলমানদের উপর কোন বিপদ অথবা বিপর্যয় আসতো তখন মুহাম্মদ (সা.) দোয়া কুনুত পড়তেন।
দোয়া কুনুত – dua kunut নিয়ে শেষ কথা
সাধারণত আমরা যারা আজকের আর্টিকেলে বিশেষ করে দোয়া কুনুত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছি, আশা করি আপনারা আপনাদের কাঙ্খিত তথ্য এখান হতে জানতে পেরেছেন এবং সর্বপরি দোয়া কুনুত সম্পর্কিত আনুসাঙ্গিক সকল তথ্য সম্পর্কেও জানতে পেরেছেন।
প্রথমে আমরা বাংলা, আরবিতে দোয়া কুনুত জেনেছি এবং এরপর বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ সম্পর্কে জেনেছি। যাইহোক, যেহেতু দোয়া কুনুত সরাসরি নামাজের সাথে সম্পর্কিত, তাই চেষ্টা করবেন যত দ্রুত সম্ভব, দোয়া কুনুত খুব সহজে মুখস্থ করার। অন্যথায় ওয়াজিব পড়া হবে না। কেননা বিতরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব। আর এই কারণেই আপনি তথা আমাদের সকলের উচিত সর্বোচ্চ চেষ্টা করা দোয়া কুনুত পাঠ করা এবং তা দ্রুত শিখে ফেলা।
সর্বপরি বলা চলে যে, আজকের আর্টিকেল তথা দোয়া কুনুত – dua kunut সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরে আপনারা চমৎকারভাবে উপকৃত হতে পেরেছেন।
দোয়া কুনুত – dua kunut নিয়ে প্রশ্ন-উত্তর
বিতরে নামাজে দোয়া কুনুতের উদ্দেশ্য হলো দোয়া করা। এটি হলো ওয়াজিব। আর এই ক্ষেত্রে আপনি যদি দোয়া সম্পর্কিত অন্য যেকোনো দোয়া পড়ে বিতরের নামাজ পড়েন, তাহলে ইনশাল্লাহ আপনার ওয়াজিব পালন হয়ে যাবে। তবে এই ক্ষেত্রে আপনার উচিত, যত দ্রুত সম্ভব দোয়া কুনুত শিখে ফেলা। উল্লেখ্য, এই প্রশ্নের উত্তরটি আপনি একজন জ্ঞানী আলেম থেকে ভালোভাবে জেনে নিবেন।
দোয়া কুনুত দুই প্রকার। এগুলো হলো – কুনুতে রাতেবা এবং অন্যটি হলো কুনুতে নাজেলা।
দোয়া কুনুত – dua kunut সম্পর্কে আরো জানতে
E-Haq is the founder of BanglaTeach. He is expertise on Education, Health, Financial, Banking, Religious and so on.