খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম এবং ফজিলত সমূহ ২০২২-২৩

Sharing is caring!

খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম জানতে চেয়ে আমাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চায় যে, কিভাবে সঠিক উপায়ে উক্ত দোয়া বা আমল করা যায় এবং একই সাথে এর ফজিলত সমূহ কি। যাইহোক, উক্ত প্রশ্নের উত্তরগুলো দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আজকের আমাদের এই আর্টিকেলটি। আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে পাঠকগণ খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত একটি ধারণা পাবে। ( খতমে জালালী ও খতমে তাহলীল পড়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানুন )

সবার প্রথম অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, খতমে খাজেগান কি বা কাকে বলে? মূলত নানা রকম বিপদ-আপদ সহ, কঠিন রোগ-বালাই, দুঃখ-কষ্ট সহ ইত্যাদি বালা-মুছিফত হতে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে আলেমগণের শিখানো দোয়া বা আমলটিই হচ্ছে খতমে খাজেগান। উক্ত দোয়া বা আমল করার মাধ্যমে একজন মুমিন নানা রকম বিপদ হতে রক্ষা পেতে পারে। আশা করি খতমে খাজেগান কি বা কাকে, সে সম্পর্কে মোটামোটি একটি ধারণা পেয়েছেন। যাইহোক, আলোচান দীর্ঘায়িত না করে চলুন এবার জানা যাক খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম সম্পর্কে এবং এর ফজিলত সমূহ সম্পর্কে। ( সুন্দর ইসলামিক নাম পড়ুন )

খতমে খাজেগান পড়ার সঠিক নিয়ম

কিভাবে একজন ব্যক্তি খতমে খাজেগান পড়াবে? ধরুণ উপরোক্ত সুবিধা সহ ফজিলত সমূহ পাওয়ার উদ্দেশ্যে আপনি খতমে খাজেগান পড়তে চাচ্ছেন, কিন্তু এমতোবস্থায় আপনি তো জানেন না খতমে খাজেগান পড়ার সঠিক নিয়ম কোনটি! ঠিক আপনার ন্যায় অনেকেই আছে, যারা খতমে খাজেগান পড়তে হিমশিম খায়। তারই ধারাবাহিকতায় এখন আমরা জানার চেষ্টা করবো খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম সম্পর্কে। খতমে খাজেগান পড়ার সঠিক নিয়ম হলো-

ইস্তেগ্ফার- ১১বার

সূরা ফাতিহা- ১০০বার

দরূদ শরীফ- ১০০বার

সূরা আলম নাশরাহ- ৭০বার

সূরা ইখলাছ- ১০০বার

পুনরায় সূরা ফাতিহা- ৭বার

পুনরায় দরূদ শরীফ- ১০০বার

তারপর এই দোয়া (একশত বার): فَسَهِّلْ يَا اِلٰهِىْ كُلَّ صَعْبٍ بِحُرْ مَتِ سَيِّدِ الْاَ بْرَارِ سَهِّلْ سَهِّلْ بِفَضْلِكَ يَاعَزِيْزُ

উচ্চারণ: ফাসাহ্হিল ইয়া ইলাহি কুল্লা ছা’বিন বিহুরমাতি সায়্যেদিল আবররি সাহ্হিল- সাহ্হিল বিফাদ্বলিকা ইয়া আজীজ। অত:পর

 يَا قَاضِىَ الْحَاجَاتْ ইয়া ক্বদ্বিয়াল হাযাত- ১০০বার

 يَا كَفِىَ الْمُهِمَّاتْ ইয়া কাফিয়াল মুহিম্মাত- ১০০বার

 يَا دَافِعَ الْبَلِيَّاتْ ইয়া দাফিয়াল বালিয়্যাত- ১০০বার

 يَا مُجِيْبَ الدَّعْوَاتْ ইয়া মুযিবাদ দা’ওয়াত- ১০০বার

 يَا رَافِعَ الدَّرَجَاتْ ইয়া রাফিয়াদ্ দারযাত- ১০০বার

 يَا حَلَّالَ الْمُشْكِلَاتْ ইয়া হাল্লালাল্ মুশ্কিলাত্- ১০০বার

 يَا مُسَبِّبَ الْاَسْبَابْ ইয়া মুসাব্বিবাল আসবাব- ১০০বার

 يَا شَافِعَ الْاَمْرَاضْ ইয়া শাফিয়াল আমরাজ- ১০০বার

 يَا مُفَتِّحَ الْاَبْوَابْ ইয়া মুফাত্তিহাল্ আব্ওয়াব- ১০০বার

 رَبِّ اِنِّىْ مَغْلُوْبٌ فَانْتَصِرْ রব্বি ইন্নি মাগ্লুবুন ফানতাছির- ১০০বার

 يَا غَوْثُ اَغِثْنِىْ وَاَمْدُدْنِىْ ইয়া গউছু আগিছ্নী ওয়া আম্দুদ্নীয়া- ১০০বার

 اِنَّالِلّٰهِ وَاِنَّااِلَيْهِ رَاجِعُوْنْ ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন- ১০০বার

 لَااِلٰهَ اِلَّاۤ اَنْتَ سُبْحَانَكَ اِنِّىْ كُنْتُ مِنَ الظّٰلِمِيْنْ লা-ইলাহা ইল্লা আ আংতা সুব্হানাকা ইন্নি কুংতু মিনাজ জোয়ালিমীন- ১০০বার

 فَاسْتَجَبْنَا لَهٗ وَنَجَّيْنٰهُ مِنَ الْغَمِّ وَكَذٰ لِكَ نُنْجِى الْمُؤْمِنِيْنْ ফাসতাজাবনা লাহু ওয়ানাজ্জাইনাহু মিনাল গম্মি ওয়া কাজালিকা নুনজিল মু’মিনীন- ১০০বার

 يَا اَرْ حَمَ الرَّحِمِيْنْ ইয়া আরহামার রহিমিন- ১০০বার

অতঃপর ১০০বার দরূদ শরীফ পাঠ করে খতম শেষ করে খালেছ দিলে মুনাজাত করবে

উপরোক্ত যে দোয়াগুলো উল্লেখ করা হয়েছে, সম্মেলিত ভাবে এগুলোই হলো খতমে খাজেগান আমল। আর বোঝার সুবিধার্থে এখানে কোন দোয়াগুলো কতবার পড়বেন, তা পাশেই উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করি এখন আপনারা খুব সহজেই খতমে খাজেগান পড়তে পারবেন।

তবে উক্ত দোয়াগুলো পড়েই শেষ নয়। যখন এখানে উল্লেখিত দোয়াগুলো পড়া শেষ করবেন সহি—শুদ্ধ ভাবে। ঠিক তখন লম্বা একটি মোনাজাতের মাধ্যমে মহান আল্লাহর নিকট আপনার দূদর্শাগুলো উল্লেখ করে মনের আকাঙ্খা প্রকাশ করবেন। তাহলে আশা করি মহান আল্লাহ তা’আলা সেই মুমিন বান্দার মনের সকল আশা পূরণ করবে। মূলত এটিই হলো খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম। আশা করি এখন যদি কেউ খতমে খাজেগান আমলটি পড়তে চায়, তাহলে সে খুব সহজেই পড়তে পারবে উক্ত দোয়া বা আমলটি।

খতমে খাজেগান পড়ার ফজিলত সমূহ

যেহেতু ইতিপূর্বে আমরা জেনে গেছি যে, খতমে খাজেগান কি এবং সঠিক ভাবে এর পড়ার নিয়ম। তাই এখন আমাদের নিকট এর ফজিলত সম্পর্কে বোঝতে সহজ হবে। তো কেন খতমে খাজেগান পড়া হয়? এটা পড়ার ফজিলত কি? হ্যা, এখন আমরা এই নিয়ে বিস্তারিত জানবো। খতমে খাজেগান এর ফজিলত সমূহ হলো-

• হঠাৎ বা আকস্মিত কোনো বিপদ-আপদ হতে রক্ষা পেতে খতমে খাজেগান পড়া হয়।
• কঠিন রোগ-বালাই হতে মুক্তি পেতে খতমে খাজেগান পড়া হয়।
• দুঃচিন্তা সহ নানা রকম মনের অবসাদ দূর করতে খতমে খাজেগান পড়া হয়।
• নানা রকম অসুবিধা হতে মুস্তি পেতে খতমে খাজেগান পড়া হয়।
• আর্থিক বা টাকা-পয়সার সমস্যা হতে মুক্তি পেতে খতমে খাজেগান পড়া হয়।

মূলত উপরোক্ত ফজিলত সমূহ পাওয়ার উদ্দেশ্যেই মুমিনগণ খতমে খাজেগান পড়ে থাকে। যদিও অনেক আলেমগণ এর আরো অনেক ফজিলতের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে কমন কয়েকটি ফজিলত এখানে তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি ইতিমধ্যে আপনারা খতমে খাজেগান পড়ার ফজিলত সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা

খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা জেনেছেন এবং পাশাপাশি আরো জেনেছেন এর ফজিলত সম্পর্কেও। আশা করি যে সকল পাঠকগণ খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম না জানার কারণে এতোদিন উক্ত আমল করতে বিলম্ব করেছেন, তাঁরা এখন তা নিয়মিত উক্ত আমল করতে পারবেন।

যাইহোক, যেহেতু আমরা মানুষ আর আমাদের প্রতিনিয়ত নানা রকম সমস্যা ও বিপদ আপদ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আর এসব বিপদ আপদ  সহ নানা রকম সমস্যায় যখনই পতিত হবে, তখনই আমাদের উচিত মহান আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থণা করা। ঠিক যেমনি আলেমগণ মানুষদের শিখায় খতমে খাজেগান পড়ার মাধ্যমে এসব বালা-মসিবত থেকে মুক্তি পেতে।

সর্বপরি বলা চলে যে, যে সকল মুসলিম মুমিনগণ এতোদিন খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম সম্পর্কে না জানতে পেরে উক্ত আমল করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাঁরা এখন এই খতমে খাজেগান আমল করার মাধ্যমে এর পূর্ণ ফজিলত পেয়ে উপৃকত হবেন।

খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আরো জানতে