অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া – ইসলামিক দিক নির্দেশনা

BanglaTeach
E-Haq
Digital Marketer at- BanglaTeach

E-Haq is the founder of BanglaTeach. He is expertise on Education, Health, Financial, Banking,...

Sharing is caring!

অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া
অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া

অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া করা হলো সন্তানের জন্য সবচেয়ে বেশি নেয়ামতের বিষয়। কেননা একজন সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামত ও মূল্যবান জিনিস হলো তাঁর পিতা-মাতার কর্তৃক দোয়া। আমরা মা-বাবা সন্তানের স্বাভাবিকভাবে বিষণ আদর ও যত্ন করি। তাদের এক বেলা ভালো খাবার খাওয়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণ কষ্ট ও চেষ্টা করি। তাদের ভালো লেখা-পড়ার করানোর জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করি। কিন্তু তাদের শরীর-স্বাস্থ্য অসুস্থ্যতার থেকে রক্ষা করতে রাসূল সা: এর দেখানো আমলগুলো করি না। আর বিশেষ করে এই উক্ত কারণেই আমাদেরকে অধিকাংশ সময়ই অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে ডাক্তার, কবিরাজের নিকট দৌড়াতে হয়। ( হাসবুনাল্লাহু এর বিশেষ ফজিলত সম্পর্কে জানুন )

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, অসুস্থ্য সন্তানের জন্য দোয়া কিন্তু তাঁর কল্যাণের ক্ষেত্রেও কাজে লাগে। সেই সন্তানের সম্ভাব্য সকল ধরনের বিপদ-আপদ সহ অনেক রকম রোগ-বালাই ইত্যাদি ধরনের ব্যধি হতে মা-বাবার দোয়ার প্রেক্ষিতে রক্ষা পায়। ( খতমে তাহলীল একই সাথে খতমে জালালী এবং খতমে খাজেগান পড়ার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন )

অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া সমূহ

অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া সমূহ
অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া সমূহ

অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া নিয়ে রাসূল সা: এর স্পষ্ট একটি হাদিস রয়েছে। একদা রাসূল সা: এর নিকট হযরত জিবরাইল আমিন আসলেন এবং তিনি দেখতে পেলেন রাসূল সা: অনেক পেরেশানে রয়েছে। ঠিক তখন রাসূল সা: কে লক্ষ্য করে হযরত জিবরাইল আমিন বললেন, ” হে রাসূল, আমি আপনার চেহারায় পেরেশানি দেখছি।”

তখন রাসূল সা: বললেন, “ হ্যা, আমি একটু চিন্তিত। (হুমা রায়হানাতান) এরা দুইজন হাসান ও হোসাইন আমার এই বাগানের ফুল। আর এরা দু’জনই এখন প্রচুর অসুস্থ। এই জন্যই আমি পেরেশানে বা চিন্তিত।”

তখন জিবরাইল আমিন বললেন, “ আপনি উক্ত কলমাগুলো পড়ে তাদের ফুঁক দিন।’

(উইজুকুমা বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাহ, মিন কুল্লি শায়তানিন ওয়া হাম্মাহ, ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাহ)

রাসূল সা: তখন উক্ত দোয়াটি পড়ে হাসান ও হোসাইন কে ফুঁক দিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে উভয় খেলার মাঠে খেলার জন্য ছুঁটে গেলেন। এবং দুজনই পুনরায় খেলতে শুরু করলেন।

যাইহোক, এই দোয়াটি দ্ধারা একজন মা-বাবা তাঁর সন্তানের জন্য যেকোনো মূহর্তে দোয়া করে সন্তানের উপর ফুঁক দিতে পারেন। এতে করে সন্তানরে উপর সমস্ত বালা-মসিফত দূর হবে, ইনশাল্লাহ।

তবে বর্তমানের অধিকাংশের মা-বাবা সন্তানের আনুসাঙ্গিক সকল কিছু নিয়ে সতর্ক থাকলেও দুঃখের বিষয় হলো সন্তানের ভালো স্বাস্থ্য রক্ষার্থে ইসলামী আমলগুলো সম্পর্কে অনেকটাই অজ্ঞত। যে বিধায় খনিক সময় পরপর সন্তানকে নিয়ে ডাক্তারের নিকট দৌড়াতে দেখা যায়।

এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, উপরে উল্লেখিত দোয়াটি কোন কোন ক্ষেত্রে সন্তানের জন্য পড়া যাবে? চলুন এটা জানা যাক-

  • সন্তান ভালোভাবে খাওয়া-দাওয়া করে না।
  • পড়া-লেখার প্রতি সন্তানের মনোযোগ নেই।
  • সন্তান অবসাদগ্রস্থ হয়ে থাকে বা মন মড়া হয়ে থাকে।
  • সন্তান তুলনামূলকভাবে অতিরিক্ত দুষ্টমি করে থাকে।
  • পিতা-মাতা সহ কারোই কথা শোনে না।
  • সন্তান অসুস্থ হলে।

এভাবে সন্তানের ক্ষেত্রে হাজারো অভিযোগের ক্ষেত্রে উক্ত দোয়াটি পড়লে, ইনশাল্লাহ মহান আল্লাহ তা’আল্লাহ আপনার সন্তানকে শিফা দান করার পাশাপাশি আনুসাঙ্গিক অন্য সকল কল্যাণ দান করবে।

সন্তানের প্রতি দোয়া করার আরেকটি ঘটনা

জাতির পিতা হযরত ইবরাহিম আ: একবার তাঁর প্রিয় সন্তান ও স্ত্রীকে জনমানবহীন মরুভূমি সাফা-মারওয়া পাহাড়ের উপত্যকায় রেখে যান। আর তখন তিনি তাদের কল্যানের জন্য আল্লাহ তা’আলার নিকট দোয়া করেন। মহান আল্লাহ তা’আলা তাঁর দোয়াটি পছন্দ করেন এবং সর্বপরি কবুল করেন।

আর মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনে উক্ত দোয়াটি উল্লেখ করে দুনিয়ার সকল পিতা-মাতাকে তাদের সন্তানের জন্য দোয়া করতে উদ্বুদ্ধ করেন। আর সেই দোয়াটি হলো-

رَبَّنَا لِيُقِيمُوا الصَّلَاةَ فَاجْعَلْ أَفْئِدَةً مِّنَ النَّاسِ تَهْوِي إِلَيْهِمْ وَارْزُقْهُم مِّنَ الثَّمَرَاتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُونَ
উচ্চারণ : রাব্বানা লিয়ুক্বিমুস সালাতা ফাঝআল আফ্‌ইদাতাম মিনান নাসি তাহ্‌ওয়ি ইলাইহিম ওয়ারযুক্হুম মিনাছ ছামারাতি লাআল্লাহুম ইয়াশকুরুন। (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৩৭)
অর্থ : হে আমার প্রতিপালক! তারা (সন্তান-সন্তুতি) যাতে নামাজ প্রতিষ্ঠা করে। কাজেই তুমি মানুষের অন্তরকে তাদের প্রতি অনুরাগী করে দাও। আর ফল-ফলাদি দিয়ে তাদের জীবিকার ব্যবস্থা কর; যাতে তারা (আল্লাহ তাআলার) শুকরিয়া আদায় করতে পারে।’

যদি কোনো পিতা মাতা তাদের অসুস্থ্য অথবা সুস্থ্য সন্তানের জন্য প্রতিনিয়ত এইভাবে দোয়া করে আল্লাহর নিকট, তাহলে সেই সন্তানের রিজিক বৃদ্ধি পায়, নামাজি হিসেবে কবুল করে। আর এতে করে পিতা-মাতা যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন সদকায়ে জারিয়া হিসেবে সেই দোয়াটি কাজ করে।

দোয়া করি মহান আল্লাহ তা’আলা অসুস্থ সন্তানের দোয়া করার পাশাপাশি যেন সকল পিতা-মাতা তাদের সন্তানের জন্য উল্লেখিত দোয়াগুলো সঠিকভাবে করতে পারে, সেই তৌফিক দান করুন, আমিন।

অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া নিয়ে শেষ কথা

অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া নিয়ে শেষ কথা

সন্তানের জন্য বাবা মায়ের দোয়া যেন ম্যাজিকের ন্যায় কাজ করে। আর এটি তখনই উপলবি্‌ধ করা সম্ভব, যখন একজন বাধ্য সন্তান তাঁর পিতা-মাতা হতে অসুস্থ্যতা কিংবা কোনো বিপদ-আপদে দোয়া পায়। আজকের আর্টিকেলে আমরা সন্তানের জন্য দোয়া আরবি এবং বাংলা উচ্চারণ সহ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এখানে সন্তানের জন্য মায়ের দোয়া কিংবা সন্তানের জন্য বাবার দোয়া আলাদা আলাদা ভাবে দেখানো হয় নি। বরং উভয়ে যাতে দোয়া করতে পারে, সে জন্য সন্তানের জন্য দোয়াগুলো বাংলা উচ্চারণ সহ তুলে ধরা হয়েছে। তবে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, আপনারা পরিবারের সুস্থতার জন্য দোয়া হিসেবে উল্লেখিত দোয়াগুলো পড়তে পারেন। আমাদের মধ্যে অনেকে ছেলে সন্তানের জন্য দোয়া অথবা মেয়ে সন্তানের জন্য দোয়া লিখে সার্চ করে থাকে। জেনে রাখা ভালো যে, এখানে যে দুটি দোয়া উল্লেখ করা হয়েছে, আপনারা সবাই উক্ত দোয়া সকল সন্তানের জন্যই পড়তে পারবেন।

তবে স্বাভাবিকভাবে একজন পিতা-মাতা তাঁর নেক সন্তানের জন্য দোয়া করে থাকে বেশি। অর্থাৎ এই জন্য যেসকল সন্তান বড় অথবা নাবালক হয়ে গেছে, তাদের উচিত মা-বাবার প্রতি বাধ্য থাকা। কোনো অবস্থায় পিতা-মাতাকে কষ্ট দেওয়া উচিত নয়। যাইহোক, সর্বপরি বলা যায় যে, অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া সম্পর্কে জানতে পেরে একজন পিতা-মাতা উক্ত দোয়াগুলোর ফজিলত দ্ধারা উপকৃত হতে পারবে।

অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া সম্পর্কে আরো জানতে

Leave a Comment