দরুদে তুনাজ্জিনা পড়ার নিয়ম এবং ফজিলত – বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ

দরুদে তুনাজ্জিনা
BanglaTeach
E-Haq
Digital Marketer at- BanglaTeach

E-Haq is the founder of BanglaTeach. He is expertise on Education, Health, Financial, Banking,...

Sharing is caring!

দরুদে তুনাজ্জিনা
দরুদে তুনাজ্জিনা

দরুদে তুনাজ্জিনা বা দরূদে নাজিয়া হলো বিভিন্ন ধরনের বালা-মুসিবত সহ সকল ধরনের বিপদ হতে রক্ষা পাওয়ার দোয়া বা আমল। আমাদের মাঝে অনেকে দরুদে তুনাজ্জিনা দোয়াটি সঠিক ভাবে উচ্চারণ করতে পারি না এবং একই সাথে এটি পড়ার নিয়ম সম্পর্কেও জানি না। আর সেই কারণেই আজকে আমরা প্রথমে দরুদে তুনাজ্জিনা সম্পর্কে জানবো। বিশেষ করে এটির বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থ, এরপর জানবো এটি পড়ার ফজিলত সমূহ সম্পর্কে এবং সর্বপরি জানবো উক্ত আমল বা দোয়া পড়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। ( খতমে আম্বিয়া ও দোয়া কুনুত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন )

তাফসীরে রুহুল বয়ান ও মানাহেজুল কিতাবে আছে, হযরত মুসা জারীর রা: নামক এক ব্যক্তি সমুদ্র পথে ভ্রমণ করছে। আর হঠাৎ সমুদ্রে ভীষণ ডেউ তৈরি হলো এবং তাঁর ভ্রমণকৃত জাহাজটি ডুবে যাওয়ার উপক্রম হলো। এমতোবস্থায় সে ব্যক্তি প্রায় ঘুম বা তন্দ্রাবস্থায় ছিল। সে হঠাৎ দেখলো মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা: তাকে নসিহাত করলো দরুদে তুনাজ্জিনা এক হাজার বার পড়ার জন্য। তখন সে সেই মোতাবেক দুরুদে তুনাজ্জিনা পড়ার শুরু করলো এবং সে লক্ষ্য করলো যে, যখন তাঁর ৩০০ বার পড়া পূর্ণ হলো, তখন সাগরের উত্তাল ঢেউ হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল এবং সে নিরাপদে সাগর পাড়ি দিল। ( খতমে খাজেগান পড়ার সঠিক নিয়ম ও হাসবিয়াল্লাহু এর বহুমুখী ফজিলত সম্পর্কে জানুন )

বিশেষ দ্রষ্ট্রব্য: এখানে উল্লেখিত সকল তথ্য ইন্টারনেট নির্ভর। সুতরাং আমল করার পূর্বে এর স্বচ্চতা সম্পর্কে আলমদের নিকট হতে নিশ্চিত হয়ে নিবেন।

শুধু মাত্র উপরোক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতেই নয়, বরং এরকম হাজারো ঘটনা রয়েছে, যা দরুদে তুনাজ্জিনা থেকে মুমিনগণ উপকৃত হতে পেরেছে। যাইহোক, চলুন ক্রমান্বয়ে দরুদে তুনাজ্জিনা আরবি, বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ জেনে নিই এবং সর্বপরি এটি পড়ার নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কেও জানবো।

দরুদে তুনাজ্জিনা – Darood E TUNAJJINA

দরুদে তুনাজ্জিনা - Darood E TUNAJJINA
দরুদে তুনাজ্জিনা – Darood E TUNAJJINA

আর্টিকেলের শুরুতে যদি আমরা দরুদে তুনজ্জিনা দোয়াটি জেনে নিতে পারি, তাহলে পরোক্ষণে অনুসাঙ্গিক অন্য সকল তথ্যগুলো সম্পর্কে বোঝতে তুলনামূলকভাব আমাদের আরো সহজ হবে। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। ( ও মেরা নবী মেরা নবী হে লিরিক্স বাংলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন )

দরুদে তুনাজ্জিনা আরবি

দরুদে তুনাজ্জিনা আরবি লিখায় যা তৈরি হয়, তা নিম্নে দেওয়া হলো-

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَعَليٰ اٰلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلوٰةً تُنَجِّيْنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ الْأَهْوَالِ وَاْلآفَاتِ وَتَقْضِيْ لَنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ الْحَاجَاتِ وَتُطَهِّرُنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ السَّيِّاٰتِ وَتَرْفَعُنَا بِهَا عِنْدَكَ اَعْليٰ الدَّرَجَاتِ وَتُبَلِّغُنَا بِهَا اَقْصىٰ الْغَايَاتِ مِنْ جَمِيْعِ الْخَيْرَاتِ فِي الْحَيَاتِ وَبَعْدَ الْمَمَاتِ- اِنَّكَ عَليٰ كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٍ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ-

দরুদে তুনাজ্জিনা বাংলা উচ্চারণ

দরুদে তুনাজ্জিনা বাংলা উচ্চারণ যা তৈরি হয়, তা হলো-

আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা সয়্যিদিনা মাওলানা মুহাম্মাদিন ওয়ালা আ-লি সয়্যিদিনা মাওলানা মুহাম্মাদিন সালাতান তুনাজ্জিনা বিহা মিন জামীয়িল আহ্ওয়ালি ওয়াল আফাত, ওয়া ত্বাক্দি লানা মিন জামীয়িল হাজাত। ওয়া তুতাহ্হিনরুনা বিহা মিন জামীয়িস্ সাইয়্যিআত। ওয়া তারফউনা বিহা ইন্দাকা আ’লাদ্দারাজাত। ওয়া তুবাল্লিগুনা বিহা আকসাল গায়াত মিন জামীয়িল খাইরাত ফিল হয়াতি ওয়া বা’দাল মামাত। ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর; বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।

দরুদে তুনাজ্জিনা বাংলা অর্থ

আরবি এবং বাংলা উচ্চারণ থেকে দরুদে তুনাজ্জিনার বাংলা অর্থ যেটি দাঁড়ায়, সেটি হলো-

হে আল্লাহ! পূর্ণ রহমত দান করুন আমাদের সরদার হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার বংশধরদের উপর, এমন দরুদ ও সালাম, এমন রহমত ও শান্তি প্রেরণ করুন যা আমাদেরকে যাবতীয় বালা মুসিবত ও প্রতিকূল অবস্থা থেকে রক্ষা করবে। যা আমাদের যাবতীয় প্রয়োজনকে মিটিয়ে দিবে। যা আমাদেরকে সমস্ত গুনাহ থেকে পবিত্র করে দিবে এবং আমাদেরকে সুউচ্চ মর্যাদা ও আপনার নৈকট্য লাভ করতে সাহায্য করবে। এবং আমাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতের সমস্ত কল্যাণের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দিবে। নিশ্চয়ই, আপনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান।

যাইহোক, ইতিমধ্যে আমরা উক্ত আমলের প্রথমে আরবি ভাষায় জানলাম। এবং এরপর ক্রমান্বয়ে এর বাংলা উচ্চারণ সম্পর্কেও জেনেছি। সর্বপরি জেনেছি দরুদে তুনাজ্জিনার বাংলা অর্থ সম্পর্কে। আশা করি দরুদে তুনাজ্জিনা সম্পর্কে মোটামোটি একটি ধারণা পেয়েছেন। এবার চলুন উক্ত আমলের ফজিলত সহ পড়ার নিয়ম কানুন ইত্যাদি আনুসাঙ্গিক জিনিস সম্পর্কে জানা যাক।

দরুদে তুনাজ্জিনা ফজিলত

দরুদে তুনাজ্জিনা ফজিলত
দরুদে তুনাজ্জিনা ফজিলত

মূলত দরুদে তুনাজ্জিনা ফজিলত দ্ধারা উপকৃত হওয়ার জন্যই একজন মুমিন প্রতি নিয়ত উক্ত আমল করে থাকে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে কি সেই ফজিলত? যদিও উপরে একটি ঘটনা দ্ধারা সংক্ষিপ্ত একটি ধারণা পাওয়া যায় এর ফজিলত সম্পর্কে কিন্তু নিম্নে পয়েন্ট আকারে পরিষ্কার একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক দরুদে তুনাজ্জিনা ফজিলত সম্পর্কে।

  • যে কোনো ধরনের বিপদ-আপদ হতে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে দরুদে তুনাজ্জিনা পড়া হয়।
  • অসুখ-বিসুখ সহ নানা ধরনের বালা-মুসিবত হতে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে পড়া হয়।
  • কবরের মৃত ব্যক্তিকে বাহিরের সকল ধরনের বিপদ-আপদ ( কুকুর, শিয়াল বা মানুষ দ্ধারা কবরের লাশ নষ্ট হওয়া ) হতে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে পড়া হয়।
  • চাকুরি হারানোর শঙ্কা কমে যায়।
  • রিজিক বৃদ্ধি পায় সহ ইত্যাদি ধরনের ফজিলত রয়েছে।

এখানে শুধু মাত্র কয়েকটি ফজিলত পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হয়েছে যদিও দরুদে তুনাজ্জিনার আরো অসংখ্য ফজিলত রয়েছে। যাইহোক, আশা করি ফজিলত সম্পর্কে জানতে পেরে এবার আপনাদের মনে একটি বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছে আর সেটি হলো কিভাবে সঠিক উপায়ে উক্ত আমল করবে। তাহলে চলুন এবার এই সম্পর্কে জানা যাক।

দরুদে তুনাজ্জিনা পড়ার নিয়ম

দরুদে তুনাজ্জিনা পড়ার নিয়ম
দরুদে তুনাজ্জিনা পড়ার নিয়ম

এতোক্ষণ আমরা দরুদে তুনাজ্জিনা সম্পর্কে জেনেছি এবং আরো জেনেছি উক্ত আমলের ফজিলত সম্পর্কে। এবার আমরা জানার চেষ্টা করবো কিভাবে একজন ব্যক্তি সঠিক উপায়ে দরুদে তুনাজ্জিনা পড়তে হয় সে সম্পর্কে। চলুন জানা যাক দরুদে তুনাজ্জিনা পড়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে।

  • পাক অবস্থায় আপনি যেকোনো জায়গায় বসে এক সাথে ১ হাজার বার উপরোক্ত দোয়া পড়তে পারেন।
  • প্রত্যেহ ফজরের নামাজের পর ১০বার উক্ত দোয়া পাঠ করা যায়।
  • এছাড়াও হাঁটতে-বসতে পবিত্র অবস্থায় উক্ত দোয়া পাঠ করা যায়।

মূলত উক্ত উপায়গুলো মান্য করে দরুদে তুনাজ্জিনা আমল বা দোয়াটি সঠিকভাবে পড়া হয়। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে একজন ব্যক্তির উপর। আশা করি উক্ত দোয়া বা আমল সম্পর্কে আপনি মোটামোটি পরিষ্কার একটি ধারণা পেয়েছেন।

নোট: অবশ্যই উক্ত আমল করার পূর্বে একজন অভিজ্ঞ আলেমের নিকট যেয়ে নিশ্চিত হয়ে নিবেন।

দরুদে তুনাজ্জিনা নিয়ে শেষ কথা

দরুদে তুনাজ্জিনা নিয়ে শেষ কথা

আমরা যারা যারা সাধারণ মুসলিম রয়েছি, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম আমলের সাথে পরিচিত হই আলেম-ওলামাদের কল্যাণে। তবে একটি দরুদ বা আমল সম্পর্কে যাচাই-বাচাই না করে আমল করা মোটেও কাম্য নয়।

এখানে দরুদে তুনাজ্জিনা নিয়ে যে সকল আলোচনা করা হয়েছে, মূলত সবটুকুই হলো ইন্টারনেট নির্ভর। তাই নিজ দায়িত্বে সকল পাঠকগণ আপনারা হুজুর আলেমগণ হতে শিউর হয়ে নিবেন উক্ত বিষয়ে। অন্যথায় সোয়াব এর বদলে গুণাহ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তবে যাইহোক, আমাদের অধিকাংশ পাঠক কিন্তু দৈনিক ইন্টারনেটে দরুদে তুনাজ্জিনা সম্পর্কে জানতে চেয়ে সার্চ করে থাকে। শুধু মাত্র বাংলাদেশ কিংবা কলকাতা থেকে নয়, বরং পুরো পৃথিবীর আনাচে-কানাছে থাকা বাঙ্গালীরাই সার্চ করে থাকে। তাদের স্বার্থেই মূলত আমাদের আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি। আশা করি ইতিমধ্যে আপনারা দরুদে তুনাজ্জিনা সম্পর্কে বিস্তারিত একটি ধারণা পেয়েছেণ। তবে একটি বিষয় আবারো উল্লেখ করি যে, দয়া করে আলেম থেকে উক্ত আমল সহ সকল আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন। সর্বপরি, আশা করি আজকের আর্টিকেল তথা দরুদে ‍তুনাজ্জিনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরে আপনারা পাঠকগণ উপকৃত হতে পারবেন।

দরুদে তুনাজ্জিনা সম্পর্কে আরো জানতে

BanglaTeach
E-HaqDigital Marketer at- BanglaTeach

E-Haq is the founder of BanglaTeach. He is expertise on Education, Health, Financial, Banking, Religious and so on.

About E-Haq

E-Haq is the founder of BanglaTeach. He is expertise on Education, Health, Financial, Banking, Religious and so on.

View all posts by E-Haq →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *