এই পোস্টে নারী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন এবং উত্তর দেওয়া হয়েছে। সাম্যের গান গাওয়া কবির কাছে নারী-পুরুষে কোনাে ভেদাভেদ নেই। বিশ্বের সমস্ত কল্যাণ অকল্যাণ সবেতেই নারী পুরুষের ভূমিকা আছে। খ্রিস্টিয় আদি পাপের পিছনে যে শয়তানের (Satan) কথা ভাবা হয় সেই অমঙ্গলের শক্তি নারী পুরুষ উভয়ের মধ্যেই থাকা সম্ভব।
তাই নারীকে এজন্য হেয় করা ঠিক নয়। বরং পৃথিবীর যা কিছু ভালাে সেই সব সৃষ্টি—যা মঙ্গলময়-সম্পদ, জ্ঞান, গুণ সৌন্দর্য সমস্তেই নারীর অবদান আছে। দিনের শেষে তপ্ত দেহ মন নিয়ে পুরুষ ঘরে ফিরে নারীর কল্যাণস্পর্শে স্বস্তি শান্তি পেয়েছে। নারী বাইরে কমেৰ্ষণা জোগায়, ঘরে সে-ই কল্যাণী। দুয়ের শক্তিতেই সৃষ্টি রয়েছে সচল। নিচে থেকে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করুন।
নারী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন
এখানে নারী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। এই প্রশ্ন গুলো মূল বইয়ে নেই। গাইড বইয়ে পেয়ে যাবেন। তাই নিচের দেওয়া সৃজনশীল গুলো সংগ্রহ করে নিন।
সৃজনশীল ১ঃ
জনৈক সমালােচকের মতে ব্রিটিশ ভারতে বঙ্গীয় মুসলমান নারীসমাজ ছিল অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও ধর্মীয় বিধি-নিষেধের নিগড়ে আবদ্ধ। নিরক্ষরতা, অশিক্ষা ও সামাজিক ভেদ-বুদ্ধিও ছিল তাদের জন্য নিয়তির মতাে সত্য। অবরুদ্ধ জীবনযাপনে অভ্যস্ত এক অসহায় জীকে তারা পরিণত হয়েছিলেন। এদেরকে আলাের জগতে আনার জন্য রােকেয়া সাখাওয়াত হােসেন আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তার বক্তব্য আমরা সমাজেরই অর্ধাঙ্গ। আমরা পড়িয়া থাকিলে সমাজ উঠিবে কীভাবে? কোন এক পা বাধিয়া রাখিলে সে খোড়াইয়া কতদূর চলিবে? পুরুষের স্বার্থ এবং আমাদের স্বার্থ ভিন্ন নহে— একই।
ক. “বিজয়-লক্ষ্মী নারী’ অর্থ কী?
খ. ‘সাম্যের গান’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. জনৈক সমালােচকের মতটি ‘নারী’ কবিতার কোন দিকটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. বেগম রােকেয়ার বক্তব্য যেন কাজী নজরুল ইসলামের নারী’ কবিতারই প্রতিধ্বনি—উক্তিটি মূল্যায়ন করাে।
সৃজনশীল ২ঃ
সুমন সাহেবের ছেলেমেয়ে একই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। হেলের জন্য গৃহশিক্ষক রেখে দিলেও মেয়ের ব্যাপারে তিনি উদাসীন। মেয়ে পরীক্ষায় খারাপ করলে প্রধান শিক্ষক অভিভাবককে ডেকে বলেন, ‘ছেলেমেয়ের প্রতি বৈষম্য করা আপনার ঠিক হচ্ছে না। ছেলেমেয়ে দু’জনই সমান গুরুত্বপূর্ণ।’
ক. কাজী নজরুল ইসলাম নর-নারী উভয়কে কী হিসেবে দেখেন?}
খ. ‘পীড়ন করিলে সে-পীড়ন এসে পীড়া দেবে তােমাকেই’ব্যাখ্যা করাে।
গ. উদ্দীপকের সুমন সাহেবের মধ্যে নারী’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে, তা ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. উদ্দীপকের প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যই যেন ‘নারী’ কবিতার প্রতিধ্বনি”— যুক্তিসহ বিশ্লেষণ করাে।
সৃজনশীল ৩ঃ
মুক্তার ও মৌসুমি দুজনই শ্রমিকের কাজ করে। সারাদিন কাজ করার পর মালিক তাদের বেতন দেন, সেই টাকা দিয়ে তাদের সংসার চলে। মুত্তার বেতন পায় ৫০০ টাকা আর মৌসুমি বেতন পায় ৩০০ টাকা। একই পরিমাণ কাজ করে কম বেতনের কথা বলতে গেলে মালিক তাকে জানিয়ে দেন, নারী বলেই তার বেতন কম। আমাদের সমাজে নারীদের ক্ষেত্রে এরূপ বৈষম্য বিদ্যমান। পুরুষশাসিত সমাজে নারীরা অধিকারবতি।
ক. ‘নারী’ কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত?
খ. কবির চোখে পুরুষ-রমণী কোনাে ভেদাভেদ নেই কেন?
গ. উদ্দীপকের সাথে নারী’ কবিতার কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. উদ্দীপকের ভাবনা নারী’ কবিতার মূল চেতনাকে ধারণ করতে পারেনি।”- মন্তব্যটির সত্যতা নির্ণয় করাে।
নারী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
এখান থেকে উপরে দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করতে পারবেন। যারা নিজে নিজে প্রশ্নের উত্তর গুলো লিখতে পারবেন না, তারা এখান থেকে উত্তর জেনে নিন।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ১ঃ
ক। বিজয়-লক্ষ্মী নারী অর্থ হলাে— জয়ের নিয়ন্তা দেবী রূপ নারী।
খ। সাম্যের গান’ বলতে কবি নারী-পুরুষের সমঅধিকারের চেতনাকে বুঝিয়েছেন।
মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রায় নারীর অবদান পুরুষের চেয়ে কোনাে অংশেই কম নয়। কবি কাজী নজরুল ইসলামের কাছে নর-নারীর প্রধান পরিচয় মানুষ হিসেবে। তিনি নর-নারীর সমঅধিকারের প্রতি বিশ্বাসী। এখানে কোনাে ভেদাভেদ রাখতে তিনি আগ্রহী নন। সাম্যের গান বলতে কবি এ বিষয়টিকেই বুঝিয়েছেন।
গ।
নারী ও পুরুষ উভয়েই সমাজের জন্যে সমান নারী’ কবিতার এ ভাবনার সঙ্গে উদ্দীপকের সমালােচকের মতটি সাদৃশ্যপূর্ণ।
‘নারী’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বর্তমান পরিস্থিতিতে নারীর যথাযথ মূল্যায়নের কথা তুলে ধরেছেন। তেমনই উদ্দীপকে উল্লিখিত সমালােচক রােকেয়া সাখাওয়াত হােসেনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে দেখিয়েছেন নারী সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অর্ধাংশ। তাদেরকে বাদ দিয়ে কিংবা বঞ্চিত রেখে সমাজের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়।
উদ্দীপকের সমালােচকও তার বক্তব্যে ‘নারী’ কবিতায় বর্ণিত নারীর পরাধীনতার কথা তুলে ধরেছেন। কিন্তু আজ সময় পাল্টেছে। আমাদের সামাজিক ব্যবস্থায় নারীর যথার্থ মর্যাদা প্রদানের সময় এসেছে।
উদ্দীপকের জনৈক সমালােচকের এ মতটিই কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কারণ নারী-পুরুষ উভয়েই সমাজের জন্যে সমান গুরুত্বপূর্ণ।
ঘ।
‘নারী’ কবিতায় বর্ণিত কাজী নজরুল ইসলামের কথারই প্রতিধ্বনি শােনা যায় উদ্দীপকে উদ্ধৃত বেগম রােকেয়ার বক্তব্যে ।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম নারী’ কবিতায় নারীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে নারীসমাজের অবদানের কথা বলেছেন। তার মতে, সমাজের উন্নতির মূলসূত্র হচ্ছে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ।
উদ্দীপকে উদ্ধৃত রােকেয়ার বক্তব্যের মূলকথাই হচ্ছে সমাজের অর্ধেক অংশ হিসেবে নারীদের প্রাপ্য মর্যাদা দান। নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রসঙ্গে নারী’ কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম একই সত্য উচ্চারণ করেছেন। এদেশের প্রচলিত সমাজব্যবস্থায় নারীরা যুগে যুগে অবহেলিত থেকেছে। কাজী নজরুল ইসলাম ও রােকেয়া সাখাওয়াত হােসেন উভয়ই তাদের লেখায় নারীর যথার্থ মূল্যায়নের প্রয়ােজনীয়তা ব্যাখ্যা করেছেন। পাঠ্যভুক্ত ‘নারী’ কবিতা এবং উদ্দীপকে উদ্ধৃত রােকেয়ার বক্তব্য, একথাই প্রমাণ উন্নতির রােকেয়ার বক্তব্যই যেন কাজী নজরুলের বক্তব্যের মধ্যে প্রতিধিনিত্ব হয়েছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নতির স্বার্থে অগ্রসর ভূমিকা রাখা জরুরি।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ২ঃ
ক। কাজী নজরুল ইসলাম নর-নারী উভয়কে মানুষ হিসেবে দেখেন।
খ। নারীর প্রতি অত্যাচার করলে, সে অত্যাচারজনিত ক্ষতির শিকার সমানভাবে হতে হবে পুরুষকেও।বর্তমান যুগ সাম্যের, বর্তমান যুগ বেদনার যুগ। জনগণের সমান অধিকার স্বীকার করে নেওয়ার যুগ। এ যুগে নারী-পুরুষ সবাই সব ক্ষেত্রে সমান মর্যাদার অধিকারী। এখন আর নারীদের প্রতি পূর্বেকার সময়ের মতাে অত্যাচার, নির্যাতন করা চলবে না। নারী-পুরুষ মিলে সমতার ভিত্তিতে কর্মক্ষেত্রে কাজ করে সভ্যতাকে অগ্রগামী করতে হবে। সমাজে শান্তিশ্রী বৃদ্ধি করতে হবে। আর এ সময় যদি কোনাে পুরুষ নারীর প্রতি পীড়ন বা অত্যাচার করে, তার জন্য ওই পুরুষও সমান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখন সময় সমতার ভিত্তিতে নারী-পুরুষের প্রীতিপূর্ণ সহ অবস্থানের। এ কথাই প্রশ্নোত্ত চরণে বােঝানাে হয়েছে।
গ।
উদ্দীপকের সুমন সাহেবের মধ্যে নারী’ কবিতার নারীর প্রতি বৈষম্যের দিকটি উঠে এসেছে।
‘নারী’ কবিতায় নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা উঠে এসেছে। কবি মত প্রকাশ করেছেন, মানবসভ্যতায় নারীর অবদান পুরুষের চেয়ে কোনাে অংশেই কম নয়। অথচ সর্বদা নারীদের ক্ষুদ্ৰজ্ঞান করা হয়, যদিও সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীর অবদান অগ্রাহ্য করার কোনাে উপায় নেই।
উদ্দীপকটিতেও লক্ষ করা যায় একই পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও সুমন সাহেবের মেয়ে তার ছেলের সমান অধিকার পাচ্ছে না। তিনি তার ছেলের জন্য গৃহশিক্ষক রাখলেও মেয়ের জন্য তা করেননি। কিন্তু সমাজে সমান অবদান রাখতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও শিক্ষায় সমানভাবে পারদশী হতে হবে। নারী’ কবিতায় নারীদের একইভাবে বনার কথা তুলে ধরে তাদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের সমাজে অনেকেই নারীদেরকে তাদের প্রাপ্য অধিকার দিতে নারাজ। নারীর প্রতি, নারীর অধিকারের প্রতি সহানুভূতিহীন এই আচরণই উদ্দীপকের সুমন সাহেবের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়।
ঘ।
‘নারী’ কবিতায় কবি যেমন নারী-পুরুষের সমান অধিকারের বিষয়ে তার বলিষ্ঠ, মত প্রকাশ করেছেন, তেমনি উদ্দীপকের প্রধান শিক্ষকও একই ধারণায় বিশ্বাসী।
নারী কিংবা পুরুষ সকলেরই আসল পরিচয় মানুষ। কিন্তু শারীরিকভাবে দুর্বল বলে নারীকে অবহেলা করা হয়। অথচ সামাজিক উন্নয়নে নারীর অবদান পুরুষের চেয়ে কোনাে অংশে কম নয়। আলােচ্য কবিতায় কবি বিভিন্ন উদাহরণের সাহায্যে সমাজে নারীর অবদানের চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি মনে করেন, বর্তমান সময়ে নারীর সম-অধিকারের দিন এসেছে। তাই নারীর ওপর নির্যাতন চলবে না, তার অধিকারকে ক্ষুন্ন করা চলবে না। অর্থাৎ তিনি নারী জাগরণের প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন।
উদ্দীপকে সুমন সাহেব তার মেয়ের চেয়ে ছেলের পড়াশােনার প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আর এ কারণে তিনি ছেলের জন্য গৃহশিক্ষক রাখলেও মেয়ের ক্ষেত্রে উদাসীন ছিলেন। মেয়ে পরীক্ষায় খারাপ করলে প্রধান শিক্ষক তাকে ডেকে বােঝান যে, ছেলে ও মেয়েতে বৈষম্য করা ঠিক নয়। কেননা, সামাজিক সমৃদ্ধিতে উভয়ের গুরুত্ব সমান। ‘নারী’ কবিতাতেও কবি তাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন, যারা নারী-পুরুষে পার্থক্য করে এবং নারীকে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে।
নারী’ কবিতায় কবি নারীর যথাযথ মূল্যায়নের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি জগতে নর ও নারীর সাম্য বা সমান অধিকারে আস্থাবান। কারণ মানবসভ্যতা নির্মাণে কখনােই পুরুষ একা জয়ী হয়ে উঠতে পারেনি। যদিও নারীর অবদান জনসম্মুখে তুলে ধরা হয়নি কখনাে, তবুও নারী কোনােকালেই পিছিয়ে ছিল না। তাদেরকে দুর্বল, দায়িত্ব পালনে অক্ষম ভাবার কোনাে অবকাশ নেই। উদ্দীপকটিতে বর্ণিত প্রধান শিক্ষকও পুরুষ শাসিত সমাজে নারীর অবমূল্যায়ন করাকে নিরুৎসাহিত করেছেন। তিনি সুমন সাহেবকে তাঁর ছেলেমেয়ে দুজনকেই সমান গুরুত্বপূর্ণ বলে মত দিয়েছেন। অতএব বলা যায়, প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য যেন কাজী নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতার প্রতিধ্বনি মন্তব্যটি যথার্থ।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ৩ঃ
ক। ‘নারী’ কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত।
খ। কবি সাম্যবাদী মানসিকতার অধিকারী বলেই তাঁর দৃষ্টিতে পুরুষরমণীতে কোনাে ভেদাভেদ নেই। সাম্যবাদী কবি নারী-পুরুষ উভয়কেই মানুষ হিসেবে দেখেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, মানবসভ্যতা নির্মাণে নারী-পুরুষের অবদান সমান। তাই তাে নারী-পুরুষে কোনাে ভেদাভেদ দেখন না তিনি।
গ।
উদ্দীপকের সাথে নারী’ কবিতায় প্রকাশিত নারীদের বঞ্চনার দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে।
নারী’ কবিতায় কবি নারীদের অধিকারের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি লক্ষ করেছেন, নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সভ্যতার অগ্রগতি সাধিত হলেও নারীরা তাদের অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি পায়নি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তারা তাদের প্রাপ্য সম্মান কখনােই পায়নি।
উদ্দীপকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নারীদের বঞ্চনার চিত্র উঠে এসেছে। এ কারণেই মুক্তার এবং মৌসুমি দুজনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করলেও মৌসুমি মুক্তারের চেয়ে অনেক কম বেতন পায়। শুধু তা-ই নয়, এ নিয়ে মালিকের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি জানিয়ে দেন, মৌসুমি নারী বলেই তার বেতন কম। একইভাবে আলোচ্য ‘নারী’ কবিতায় কবি নানা উদাহরণ টেনে নারীদের অধিকারবঞ্চিত হওয়ার কথা তুলে ধরেছেন। অর্থাৎ নারীদের বঞ্চনার চিত্র উপস্থাপনের সূত্রে উদ্দীপকের সাথে আলােচ্য কবিতার সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ।
উদ্দীপকের ভাবনা ‘নারী’ কবিতার মূলচে ধারণ করতে পারেনি”- মন্তব্যটি সম্পূর্ণরূপে।
নারী’ কবিতায় কবি নারী সমাজের বনার চিত্র তুলে ধরে এর বিরুদ্ধে সােচ্চার হয়েছেন। তিনি মনে করেন, মানবসভ্যতার উন্নয়নে নারী ও পুরুষের ভূমিকা সমান হলেও নারীরা এর যথাযথ স্বীকৃতি পায়নি। সমাজ সচে কবি তাই তাদের অধিকারের পক্ষে লেখনী ধারণ করেছেন।
উদ্দীপকে লেখক একটি ঘটনার অবতারণা করে সমাজে বিরাজমান নারীপুরুষ ভেদ-বৈষম্যের দিকটি উন্মােচন করেছেন। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বৈষম্যমূলক মানসিকতার কারণেই উদ্দীপকের মৌসুমি সমান পরিশ্রম করার পরও কম পারিশ্রমিক পায়। এর মধ্য দিয়ে মূলত আমাদের সমাজে নারীদের প্রতি নেতিবাচক মনােভাব পােষণের দিকটি ফুটে উঠেছে। নারী’ কবিতায় কবি সুদীর্ঘকাল ধরে নারীদের ওপর চলমান বনার চিত্র তুলে ধরেছেন। উদ্দীপকের ঘটনাবর্তের মধ্য দিয়েও এ দিকটি প্রতিভাত হয়।
তবে এটিই এ কবিতার একমাত্র দিক নয়। কেননা আলেচ্য কবিতাটিতে এ ছাড়াও কবি নারীদের বঞ্চনার কারণ তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি কবিতাটিতে তিনি এমন বনার অবসান কামনা করেছেন এবং নারীদের অধিকারের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। উদ্দীপকে এসব বিষয় সেভাবে উঠে আসেনি। সে বিবেচনায়, প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি পূর্ণরূপে সত্য।
শেষ কথা
আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক ভালোলেগছে এবং এই পোস্ট থেকে নারী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম শিক্ষামূলক আরও পোস্ট পেতে আমার সাথেই থাকুন। অষ্টম শ্রেণির বাংলা ১ম পত্রের অনেক পোস্ট এই ওয়েবসাইটে শেয়ার করা হয়েছে। পোস্ট টি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আরও দেখুনঃ
নারী কবিতা- কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা ১ম পত্র ৮ম শ্রেণি