E-Haq is the founder of BanglaTeach. He is expertise on Education, Health, Financial, Banking,...
১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে আপন করে পেয়েছি। লাখো শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে প্রাপ্য আমাদের এই মাতৃভাষা। জাতীয় সংঘ কর্তৃক এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে কার্যকর করা হয়েছে। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে এই দিবসটি বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশে পালন করা হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রতিবছর বাংলাদেশ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। এ সকল রচনা প্রতিযোগিতায় সাধারণত ২০০ শব্দ, ৫০০ শব্দ অথবা ১০০০ শব্দ বিশিষ্ট একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা লিখতে বলা হয়ে থাকে। যে সকল প্রতিযোগীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ আজকের এই পোস্টে আমি আপনার সাথে শেয়ার করব কিভাবে আপনি একুশে ফেব্রুয়ারি বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা সহজ সরল এবং সাবলীল ভাষায় লিখতে পারবেন। এছাড়াও আজকের এই পোস্টে আমি আপনার সাথে ১০০০ শব্দবিশিষ্ট একটি একুশে ফেব্রুয়ারি রচনার নমুনা শেয়ার করব। সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনাটি সংগ্রহ করুন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা
ভাষা শহীদদের স্মরণে প্রতিবছর বাংলাদেশে অনেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও রচনা প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একুশে ফেব্রুয়ারি বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এর উপর রচনা লিখতে বলা হয়ে থাকে। আপনি যদি রচনা লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য উপযুক্ত। নিচে আপনার জন্য এক হাজার শব্দ বিশিষ্ট একটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা শেয়ার করা হয়েছে।
ভূমিকা:
সূচনা: বাঙালি র ইতিহাসে এক গৌরবময় ও ঐতিহ্য বাহী দিন হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালির জাতীয় জীবনে সকল চেতনার উৎস হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রাম এ একটি ঐতিহাসিক দিন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
মাতৃভাষার সংজ্ঞা:
মাতৃভাষার সংজ্ঞা: ভাষার মাধ্যমে মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করে । বিশ্বের প্রতিটি জাতির রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি। একটি শিশু জন্মের পর মায়ের মুখের কথা শুনে শুনে সে প্রথম কথা বলতে শেখে।আর সেটিই তার মাতৃভাষা। বাঙালিদের মাতৃভাষা বাংলা, ইংরেজিদে মাতৃভাষা ইংরেজি ইত্যাদি।
মানবজীবনের মাতৃভাষা ভূমিকা:
মানবজীবনের মাতৃভাষা ভূমিকা: প্রতিটি মানুষের জীবনে মাতৃভাষার ভূমিকা অসীম। মাতৃভাষায় একটি শিশু তার মনের ভাব প্রকাশ করতে শেখে।
এ ভাষাতেই মানুষ লেখন লিখে, এক হৃদয় এর ভাব ভালোবাসা অন্য হৃদয়ে প্রদান করে। মাতৃভাষার মাধ্যমে যতটা সহজ ভাবে মনের ভাব প্রকাশ করা যায় অন্য কোন ভাষায় তা অকল্পনীয়। সুতরাং মানব জীবনে মাতৃভাষার ভূমিকা অপরিহার্য।
বাংলা ভাষার ইতিকথা:
বাংলা ভাষার ইতিকথা: “যে হবে বঙ্ঘেতে জন্মি হিংসে বঙ্ঘবানী, সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি”
বাংলা ভাষার ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়।প্রায় এক হাজার বছর থেকে বারোশত বছর আগে রচিত বৌদ্ধ সহজিয়াদের চর্যাগীতিকায় বাংলা ভাষার প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া গেছে।
ভাষা আন্দোলনের পটভূমি
ভাষা আন্দোলনের পটভূমি: ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগষ্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয় । বাংলা ভাষা এবং বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি চরম অবজ্ঞা পোষন করে সেদিন বাঙালি জাতিকে নতুন করে যে পরাধীনতার শিকলে বন্দি করা হয় তার পরিণাম খুব ই ভয়াবহ। বাংলার দামাল ছেলেরা মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য শপথ গ্রহণ করে। পূর্ব বাংলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের:
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের: ১৯৪৮ সালের একুশে মার্চ রেসকোর্সের ময়দানে জিন্নাহ সাহেব উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করলে ছাত্র জনতা বিক্ষোভ এ ফেটে পড়ে। শুরু হয় মিছিল মিটিং তার পর ১৪৪ ধারা জারি করে ২১ এ ফেব্রুয়ারিতে সকল মিছিল মিটিং নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু বাংলার দামাল ছেলে ১৪৪ধারা ভঙ্ঘ করে মিছিল বের করে , মিছিলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়, শহীদ হন সালাম, বরকত , রফিক জব্বার সহ আরো অনেক।
১৯৫৬ সালের স্বীকৃতি:
১৯৫৬ সালের স্বীকৃতি: ১৯৫২ সালের ২১ফেব্রুয়ারীতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের সংবাদ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।সারা দেশ বিক্ষোভ এ ফেটে পড়ে,এ অবস্থায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার রাষ্টপ্রধান গন পাকিস্তান কতৃপক্ষ কে পূর্ব বাংলার ভাষার দাবি মেনে নেয়ার জন্য অনবরত চাপ দিতে লাগল। ফলে ১৯৫৬ সালে র সংবিধান এ পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।
একুশের প্রভাব:
একুশের প্রভাব: ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির মধ্যে চেতনার সৃষ্টি হয়।একুশে ফেব্রুয়ারি র তাৎপর্য শহীদ দিবস পালন এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি।তা বাঙালির জাতীয় জীবনে সর্বত্র প্রভাব বিস্তার লাভ করেছে যা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি: ১৯৯৯সালের ১৭ নভেম্বর ফ্রান্সের প্যারিসে ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদ ২১ শে ফেব্রুয়ারি কে ” আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির উদ্যোগ:
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির উদ্যোগ: একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পরিনত করার প্রথম উদ্যোগতা কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশী রফিকুল ইসলাম। তাঁরই ই উৎসাহে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ৯ই সেপ্টেম্বর ৯৯ প্রস্তাব টি ইউনেস্কো দপ্তর এ আনুষ্ঠানিক ভাবে পেশ করেন।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ:
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ: একুশে ফেব্রুয়ারি এখন শুধু আমাদের মাতৃভাষা নয়। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে।
বাংলাদেশ এ দিবসটির গুরুত” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি”
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। বাঙালির যেসব অর্জন রয়েছে সবচেয়ে প্রধান অর্জন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।”আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার।
আমাদের করনীয়:
আমাদের করনীয়: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বাস করতেন ” আগে চাই বাংলার গাঁথুনি , তারপর ইংরেজি শেখার পত্তন” এ কথাটির তাৎপর্য রয়েছে ” মাতৃভাষা র গুরুত্ব আরোপ এর মধ্যে।
উপসংহার:
উপসংহার:” ছেলে হারা মায়ের অশ্রু গড়া এ ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি” আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আমাদের জাতীয় জীবনের অহংকার আমাদের গর্ব।আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এ শ্রদ্ধা জানাই সেই শহীদের যারা আমার চেতনাকে রক্তে রাঙিয়ে দিয়েছে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি রচনা ২০২৩
আজকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৫২ সালের আজকের এই দিনে রফিক বরকত সালাম ও জব্বারের মত হাজারো যুবকের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা এই দিবসটি অর্জন করতে পেরেছি। পাকিস্তান সরকার জোর করে পূর্ব বাংলার মানুষের উপর জোর করে উর্দু ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিল।
কিন্তু কিন্তু বাংলার তরুণ দামাল ছেলেরা এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ ছিল। পরিস্থিতি খারাপ দেখে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই ১৪৪ ধারা জারি ভঙ্গ করে আন্দোলন মিছিল তৈরি করে। মিছিলে পাক হানাদার বাহিনীরা বর্বর গুলি বর্ষণ করে যার কারণে হাজারও তরুণ শহীদ হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এই দিনে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ইতোমধ্যে আমি এক হাজার শব্দে বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একটি নমুনা রচনা শেয়ার করেছি। এ পর্যায়ে আপনি এখান থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি রচনাটিও সংগ্রহ করতে পারবেন। নিচের দেওয়া লিংকে ভিজিট করে রচনাটি সংগ্রহ বা ডাউনলোড করতে পারবেন।
সর্বশেষ কথা
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বা একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে শেয়ারকৃত রচনাটি আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। আপনি যদি মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আশা করি রচনার এই নমুনাটি আপনাকে অনেক উপকার করবে। পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন যাতে তারাও এই রচনা থেকে উপকৃত হতে পারে।
E-Haq is the founder of BanglaTeach. He is expertise on Education, Health, Financial, Banking, Religious and so on.