আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন
ekram145
UX/UI Designer at - Adobe

Sharing is caring!

এই পোস্টে আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করা হয়েছে। আমার পরিচয়’ কবিতায় কবি সৈয়দ শামসুল হক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র ও আত্মমর্যাদাবোেধসম্পন্ন জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠার নেপথ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক পটভূমি তুলে ধরেছেন। কবিতায় কবি আত্মপরিচয় নির্দেশ করতে গিয়ে বাঙালির বহু পুরনাে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সুদীর্ঘ সংগ্রামী ইতিহাস আমাদের সামনে এনেছেন। এতে তাঁর আত্মমর্যাদাবােধ জাগ্রত হয়েছে।

হঠাৎ করে পাওয়া বা রাতারাতি গড়ে ওঠা কোনাে বিষয় কবির এই আত্মপরিচয়ের পেছনে কাজ করেনি। ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যােগ্য নেতৃত্বে মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় অর্জনের সঙ্গে আত্মপরিচয়টি জুড়ে দিয়েছেন। আমার পরিচয়’ কবিতায় মূলত ঐতিহ্যমণ্ডিত বাংলাদেশের অনবদ্য রূপটি প্রকাশ পেয়েছে। নিচে থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন পড়েন।

আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

এখানে আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো দেওয়া আছে। এই প্রশ্ন মূল বইয়ের ভিতরে দেওয়া নেই। গাইড বইয়ে এই প্রশ্ন ও বোর্ড প্রশ্ন পেয়ে যাবেন।  তাই যাদের গাইড বই নেই, তারা এখান থেকে উত্তর সহ সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো সংগ্রহ করেন।

সৃজনশীল ১ঃ 

একসাথে আছি, একসাথে বাঁচি। আজও একসাথে থাকবই
সব বিভেদের রেখা মুছে দিয়ে, সাম্যের ছবি আঁকবই।
বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাইবোন
এক হউক, এক হউক, এক হউক হে ভগবান।

ক. বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রথম নিদর্শনের নাম কী?
খ. এসেছি বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর থেকে। ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্ধৃত প্রথম চরণ দুটির সাথে দ্বিতীয় চরণ দুটির সাদৃশ্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় চরণ দুটির মূলভাব ‘আমার পরিচয়’ কবিতার সমগ্র মূলভাবকে ধারণ করে। উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন করো।

সৃজনশীল ২ঃ 

মৌর্য যুগ → গুপ্ত যুগ → স্বাধীন শাসক → পাল আমল → সেন আমল → মুসলিম শাসন → ইংরেজ শাসন → পাকিস্তান আমল → স্বাধীন বাংলাদেশ।

ক. ‘মহুয়ার পালা’ কী?
খ. ‘কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম’ বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকটি ‘আমার পরিচয়’ কবিতার কোন দিকটির প্রতিভাষ্য?-ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় বাঙালি জাতিসত্তার যে রাজনৈতিক ইতিহাস প্রকাশ পেয়েছে তার সমগ্রকে ধারণ করেছে উদ্দীপকের ছকটি-যৌক্তিক মূল্যায়ন করো।

আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

এই অংশে উপড়ের দেওয়া সৃজনশীল গুলর উত্তর দেওয়া আছে। অনেকে নিজে নিজে উত্তর লিখতে পাড়বেন না। বা জ্যাদের কাছে গাইড বৈ ণেই তাড়া সবাই এখান থেকে আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সংগ্রহ করবেন।

উত্তর ১ঃ  

ক. বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন চর্যাপদ।

খ. বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবিস্মরণীয় ভূমিকার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে আলোচ্য চরণে।

‘আমার পরিচয়’ কবিতায় বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সব কিছুই তুলে ধরা হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে কবি এখানে স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনায়ক ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেছেন। তাঁরই নেতৃত্বেই আমরা অর্জন করি স্বাধীন স্বদেশ। তাঁর সেই মহান কীর্তি স্মরণ করে বলা হয়েছে, ‘এসেছে বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর থেকে’।

গ.

উদ্দীপকে উদ্ধৃত প্রথম ও দ্বিতীয় চরণদ্বয়ে বাঙালির ঐক্যবদ্ধতার আকাক্সক্ষা প্রকাশ পেয়েছে, যা ‘আমার পরিচয়’ কবিতাতেও লক্ষণীয়।

সৈয়দ শামসুল হক রচিত ‘আমার পরিচয়’ কবিতাটি বাঙালি জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক অনন্য আখ্যান। ইতিহাসের নানা ভাঙা-গড়ার খেলা বাঙালি জাতিতে সংঘবদ্ধ করেছে। একসাথে সংগ্রাম করে জাতি গঠনের প্রেরণা জুগিয়েছে সেই অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে উদ্দীপকে উদ্ধৃত প্রথম দুই চরণে।
বাংলার প্রতিটি মানুষ পরস্পরের অতি আপন। দেশের উন্নতির জন্য এই একতা অত্যন্ত জরুরি। বাঙালির মাঝে ঐক্যের সুর যেন ধ্বনিময় হয় সে প্রার্থনাই করা হয়েছে আলোচ্য উদ্দীপকের দ্বিতীয় কবিতাংশে। উদ্দীপকের প্রথম স্তবকেও আমরা বাঙালির একাত্মতার পরিচয় পাই।
[প্রশ্নটি সঠিক সৃজনশীল আঙ্গিকে রচিত না হওয়ায় পরিপূর্ণভাবে উত্তর দেওয়া যায়নি।]

ঘ.

উদ্দীপকের শেষ দুই চরণে বাঙালির যে ঐক্যবদ্ধতার প্রত্যাশা ব্যক্ত হয়েছে ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় কবির উদ্দেশ্যও তা-ই।

‘আমার পরিচয়’ কবিতায় কবি বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ধারাবাহিক ইতিহাস তুলে ধরেছেন। ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ বাঁকগুলো বাঙালিকে বিশ্বের বুকে এক আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আমাদের গর্বের ইতিহাসে ও ঐতিহ্য থেকে প্রেরণা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলেই দেশটাকে আমরা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারব।

উদ্দীপকের দ্বিতীয় কবিতাংশে প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রার্থনা। তা হলো- বাঙালি জাতির প্রাণ যেন এক সুতোয় গাঁথা থাকে। অর্থাৎ বাঙালি যেন পরস্পরকে একতার বাঁধনে বাঁধে। ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় মূলসুরও এটি।

বাংলাদেশ আজ স্বাধীন, সার্বভৌম একটি দেশ। এদেশের স্বাধীন মর্যাদাশীল জাতিসত্তা গঠনের পেছনে রয়েছে সমৃদ্ধ এক ইতিহাস, শতবর্ষের ঐতিহ্য। সেই ইতিহাস ও ঐতিহ্যের পটভূমি ‘আমার পরিচয়’ কবিতার মাধ্যমে বাঙালিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন কবি সৈয়দ শামসুল হক। প্রতিটি বাঙালির মনে যেন এমন আত্মীয়তার সুর জেগে ওঠে সেই প্রত্যাশা হয়েছে উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশে। এ কারণেই উদ্দীপকটিকে আলোচ্য কবিতার মূলভাবের ধারক বলা যায়।

উত্তর ২ঃ

ক. মহুয়ার পালা হচ্ছে- মৈমনসিংহ গীতিকার একটি পালা।

খ. ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় ‘কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম’ বলতে বাঙালির সংগ্রামমুখরতার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

আনুমানিক ১০৭০-১০৭৭ খ্রিষ্টাব্দে কৈবর্ত সম্প্রদায়ের লোক দিবৎ-এর নেতৃত্বে যে বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল ইতিহাস তা কৈবর্ত বিদ্রোহ নামে পরিচিত। রাজা মহীপালের বিরুদ্ধে অনন্ত-সামন্ত-চক্র মিলিত হয়ে এই কৈবর্ত বিদ্রোহের সূচনা করে। দিব্য বা দিব্বোক এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। বাঙালি জাতির বিদ্রোহের ঐতিহ্য বোঝাতে এই উদাহরণটি উল্লেখ করা হয়েছে ‘আমার পরিচয়’ কবিতায়।

গ.

উদ্দীপকে ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় উল্লিখিত ইতিহাসের ধারাবাহিকতা সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

‘আমার পরিচয়’ কবিতায় তুলে ধরা হয়েছে বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল পরিচয় ও ইতিহাস। আদিকাল থেকে বাঙালি জাতির সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট কবিতায় উল্লেখ করা হয়েছে। ইতিহাসের ঘটনাক্রম অনুযায়ী চর্যাপদ, কৈবর্ত বিদ্রোহ, পালযুগ, বারো ভূঁইয়া, তিতুমীর, হাজী শরিয়ত, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ইত্যাদি বিষয় উল্লিখিত হয়েছে। অর্থাৎ ইতিহাসের এই ধারাবাহিকতা অবলম্বন করেই আজকের বাংলাদেশ।

উদ্দীপকে এই অঞ্চলের বিভিন্ন শাসনামলের ধারাবাহিক ছক অঙ্কন করা হয়েছে। এখানে দেখানো হয়েছে মৌর্য আমল থেকে শুরু হয়ে কীভাবে নানা পটপরিবর্তিত হয়েছে। সেই সব ঐতিহাসিক সময়গুলো পাড়ি দিয়ে আমরা আজকের স্বাধীন বাংলাদেশে এসে উপনীত হয়েছে। প্রতিটি দেশ-জাতি এভাবেই ইতিহাসের গতিধারায় এগিয়ে চলে। ‘আমার পরিচয়’ কবিতায়ও অনুরূপভাবে বাঙালির পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে কবি ইতিহাসের সেই ক্রমধারাটি তুলে ধরেছেন।

ঘ.

উদ্দীপকের ছকটিতে প্রকাশিত রাজনৈতিক শাসনামলের ধারাবাহিকতার চিত্রটি ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় বর্ণিত বাঙালি জাতিসত্তার যা রাজনৈতিক ইতিহাসকে সফলভাবে ধারণ করেছে।

‘আমার পরিচয়’ কবিতায় তুলে ধরা হয়েছে বাঙালির জাতিসত্তার পরিচয়। এখানে বাংলার প্রাচীন অবস্থা থেকে আধুনিক অবস্থায় পর্যন্ত ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের উল্লেখ করা হয়েছে। অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবে বিভিন্ন শাসনামলে সংঘটিত আন্দোলন, সংগ্রাম, বিদ্রোহ, মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি এই কবিতায় স্থান পেয়েছে। অর্থাৎ বাঙালি জাতিসত্তার রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারাটি কবিতায় তুলে ধরেছেন কবি।

উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে মৌর্যযুগ থেকে শুরু হয়ে বাঙালির পথপরিক্রমার চিত্র। কীভাবে বিভিন্ন শাসনামল পেরিয়ে বাঙালি আজকের স্বাধীন বাংলাদেশে উপনীত হয়েছে সেটি ছক বন্দি করে একনজরে আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। কিন্তু এ অবস্থায় আসার ক্ষেত্রে আমরা পেরিয়েছি অনেক চড়াই উৎরাই। যার সাক্ষী ছকে উল্লেখিত শাসনামলগুলো।

‘আমার পরিচয়’ কবিতায় আমরা দেখি বাঙালির পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে কবি বাঙালি জাতি সত্তার উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ তুলে ধরেছেন। বাঙালিকে ঐতিহ্যমণ্ডিত জাতি হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন। বাঙালির পরিচয় তুলে ধরতে কোনো কিছুই যেন কবির দৃষ্টি এড়ায়নি। উদ্দীপকে বর্ণিত শাসনামলগুলো আমাদের সেই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসেরই ধারক। তাই বলতে পারি, উদ্দীপকের ছকটিতে প্রকাশিত রাজনৈতিক শাসনামলের চিত্রটি ‘আমার পরিচয়’ কবিতার বাঙালি জাতিসত্তার যে রাজনৈতিক ইতিহাস প্রকাশ পেয়েছে তার সমগ্রকে ধারণ করে।

আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

এখানে এই কবিতার আরও কিছু অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করা হয়েছে। আপনারা চাইলে এই প্রশ্ন গুলোও পড়ে নিতে পারেন। যাদের অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন প্রয়োজন তারা এখান থেকে পড়ুন।

ইংরেজ শাসকদের কাছ থেকে উপমহাদেশের মুক্তির জন্য মহাত্মা গান্ধী এক সময় এদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেন। নানাভাবে তাদের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত করার চেষ্টা করেন। এরই ধারাবাহিক ফসল স্বদেশী আন্দোলন, অহিংস আন্দোলন ইত্যাদি। কালের বিবর্তনে জন্ম পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি পৃথক রাষ্ট্রের এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের।

ক. বৌদ্ধবিহার কোথায় অবস্থিত?
খ. “আমি তো এসেছি ‘কমলার দীঘি’, ‘মহুয়ার পালা’ থেকে” – একথা দ্বারা কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘আমার পরিচয়’ কবিতার সাথে যেদিক দিয়ে সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘আমার পরিচয়’ কবিতার খণ্ডাংশ মাত্র, পূর্ণচিত্র নয় – যুক্তিসহ লেখো।

উত্তর ১ঃ 

 ক. বৌদ্ধবিহার পাহাড়পুরে অবস্থিত।

খ. “আমি তো এসেছি ‘কমলার দীঘি’ ‘মহুয়ার পালা’ থেকে” বলতে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিকাশধারার কথা বলা হয়েছে।

বাঙালি জাতি সাংস্কৃতিক বিকাশ ও বিবর্তনের পথ ধরেই এই অবস্থানে এসেছে। ‘কমলার দীঘি’ ও ‘মহুয়ার পালা’ হচ্ছে মৈয়মনসিংহ গীতিকার পালা। এতে বাঙালির আবহমান জীবনধারার চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। সেই সংস্কৃতির ধারাবাহিকতার পথ ধরেই বাঙালি আজকের অবস্থানে এসেছে।

গ.

আন্দোলন-সংগ্রাম ও বিবর্তনের ধারায় যে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে তার প্রকাশ ঘটেছে উদ্দীপক ও ‘আমার পরিচয়’ কবিতায়।

বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ লাভ করেছে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। তিতুমীর-হাজী শরিয়ত উল্লাহ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর পর্যন্ত অসংখ্য বিপ্লবী তাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁদের সেই কীর্তি আমাদের গৌরবোজ্জ্বল পরিচয় বহন করে। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা পেয়েছি স্বাধীন স্বদেশ। সৈয়দ শামসুল হক তার ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় গভীর মমত্বের সাথে চিত্রিত করেছেন আমাদের সংগ্রামী ইতিহাসের পটভূমি।

উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে ইংরেজবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের কথা। মহাত্মা গান্ধী উপমহাদেশের মানুষের মাঝে মুক্তির চেতনা ও দেশপ্রেম জাগ্রত করেন। সেই ধারাবাহিকতায় স্বদেশি আন্দোলন, অহিংস আন্দোলনের মতো ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে। তারই পথ ধরে পাকিস্তান, ভারত পরে স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। উদ্দীপকে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে সেই বিষয়টি মুখ্য হয়ে উঠেছে। উদ্দীপকের এই দিকটি আমার পরিচয় কবিতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

 ঘ.

‘আমার পরিচয়’ কবিতায় বাঙালি জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠার সামগ্রিক ইতিহাস বর্ণিত হলেও উদ্দীপকে শুধু মানুষের মুক্তিসংগ্রামের কথা বলা হয়েছে।

সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় বাঙালি জাতীয় পরিচয় ও স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা অত্যন্ত মমতার সাথে তুলে ধরেছেন। রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বাঙালি জাতি কীভাবে সমৃদ্ধ হয়েছে সেই ইতিহাস-ঐতিহ্য অত্যন্ত চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। চর্যাপদের সময় থেকে শুরু করে আজকের সাহিত্য চেতনা কীভাবে বিকাশ লাভ করেছে তারও সাক্ষ্য দেয় কবিতাটি। ‘আমার পরিচয়’ কবিতা মূলত বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিচয়।

ইংরেজদের শোষণ-নির্যাতনে উপমহাদেশের মানুষ পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। তখন এই অঞ্চলের শান্তির প্রতীক মহাত্মা গান্ধী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তিনি সবার মাঝে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত করেছিলেন। সে কারণেই স্বদেশি আন্দোলন ও ‘অহিংস আন্দোলন’ নামে গুরুত্বপূর্ণ জাগরণের সূচনা ঘটে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত, পাকিস্তান পরবর্তীতে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের এই ইতিহাস ছাড়াও ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় রয়েছে আরো অনেক বিষয়।

স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে এক সমৃদ্ধ ইতিহাস। পুরো পথটি মানুষের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মহিমায় পূর্ণ। আর যুগে যুগে মানুষের সেই অবিনাশী চেতনা গঠিত হয়েছে গৌরবময় সাংস্কৃতিক চর্চার দ্বারা। আমাদের এসবই ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় উঠে এসেছে। কিন্তু আমাদের সাংস্কৃতিক জীবনবোধের পরিচয় আলোচ্য উদ্দীপকে অনুপস্থিত। ‘আমার পরিচয়’ ও উদ্দীপক পর্যালোচনা করলে পাই, উদ্দীপকে শুধু বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের কথাই বলা হয়েছে। সাংস্কৃতিক বিকাশ ও বিবর্তনের দিকসমূহ সেখানে আলোচিত হয়নি। তাই উদ্দীপকটি ‘আমার পরিচয়’ কবিতার খণ্ডাংশ মাত্র, পূর্ণচিত্র নয়।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট থেকেআমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমার সাথেই থাকবেন। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল শ্রেণির শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করা হয়।  আমার সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আরও দেখুনঃ

আমার পরিচয় কবিতা – সৈয়দ শামসুল হক। বাংলা ১ম পত্র

অবাক সূর্যোদয় – হাসান হাফিজুর রহমান। পিডিএফ

তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা MCQ প্রশ্ন উত্তর- পিডিএফ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *