জাগো তবে অরণ্য কন্যারা- সুফিয়া কামাল। ৮ম শ্রেণি

জাগো তবে অরণ্য কন্যারা
ekram145
UX/UI Designer at - Adobe

Sharing is caring!

এই পোস্টে জাগো তবে অরণ্য কন্যারা এই কবিতা টি দেওয়া হয়েছে। জাগো তবে অরণ্য কন্যারা’ কবিতাটি সুফিয়া কামালের ‘উদাত্ত পৃথিবী’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত। প্রকৃতির রূপ-সচেতন কবি চারপাশের অরণ্য-নিধন লক্ষ করে ব্যথিত। তাই মৌসুমি ফুলের গান আর তার কণ্ঠে জাগে না। বরং চারপাশে সবুজ প্রকৃতির বিলীন হওয়া দেখে তাঁর মন হাহাকার করে ওঠে। কবি তাই অরণ্য-কন্যাদের জাগরণ প্রত্যাশা করেন। তিনি চার দিকে দিকে আবার সবুজ বৃক্ষের সমারোহের সৃষ্টি হোক; ফুলে ও ফসলে ভরে উঠুক পৃথিবী; মানুষের অস্তিত্ব রক্ষা পাক বিপন্নতার হাত থেকে।

জাগো তবে অরণ্য কন্যারা

এখানে জাগো তবে অরণ্য কন্যারা কবিতা শেয়ার করা হয়েছে। কবিতা টি অষ্টম শ্রেণির বই থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এখান থেকে সম্পূর্ণ কবিতা টি পড়েনিন।

জাগো তবে অরণ্য কন্যারা
-সুফিয়া কামাল 

মৌসুমি ফুলের গান মোর কণ্ঠে জাগে নাকো আর
চারিদিকে শুনি হাহাকার।}
ফুলের ফসল নেই, নেই কারও কণ্ঠে আর গান
ক্ষুধার্ত ভয়ার্ত দৃষ্টি প্রাণহীন সব মুখ ম্লান ।

মাটি অরণ্যের পানে চায়
সেখানে ক্ষরিছে স্নেহ পল্লবের নিবিড় ছায়ায়।
জাগো তবে অরণ্য কন্যারা! জাগো আজি,
মর্মরে মর্মরে ওঠে বাজি

বৃক্ষের বক্ষের বহ্নিজ্বালা
মেলি লেলিহান শিখা তোমরা জাগিয়া ওঠো বলো।
কঙ্কণে তুলিয়া ছন্দ তান
জাগাও মুমূর্ষু ধরা-প্রান

ফুলের ফসল আনো, খাদ্য আনো ক্ষুধার্তের লাগি
আত্মার আনন্দ আনো, আনো যারা রহিয়াছে জাগি
তিমির প্রহর ভরি অতন্ত্র নয়ন, তার তরে
ছড়াও প্রভাত আলো তোমাদের মুঠি ভরে ভরে।

জাগো তবে অরণ্য কন্যারার কবি পরিচিতি

সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালের ২০শে জুন বরিশাল জেলার শায়েস্তাবাদ গ্রামে তাঁর মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল কুমিল্লায়। সে আমলে মেয়েদের লেখাপড়ার মোটেই সুযোগ ছিল না। তিনি নিজের চেষ্টায় লেখাপড়া শিখে ছোটবেলা থেকেই কবিতাচর্চা শুরু করেছিলেন। কিছুকাল তিনি কলকাতার একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। সুদীর্ঘকাল ধরে সাহিত্যচর্চা, সমাজসেবা ও নারীকল্যাণ-মূলক নানা কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর কবিতা সহজ, ভাষা সুললিত, ছন্দ ব্যঞ্জনাময়।

কবি সুফিয়া কামালের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো : সাঁঝের মায়া, মায়া কাজল, ‘মোর যাদুদের সমাধি পরে’। তাঁর গল্পগ্রন্থ : কেয়ার কাঁটা; স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ : ‘একাত্তরের ডাইরি’; শিশুদের জন্য তিনি লিখেছেন : ‘ইতল বিতল’ ও ‘নওল কিশোরের দরবারে’।কবি সুফিয়া কামাল তাঁর কবিপ্রতিভার জন্য অনেক পুরস্কার লাভ করেছেন। সেসব হলো : বাংলা একাডেমি পুরস্কার, মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক, একুশে পদক, বুলবুল ললিতকলা একাডেমী পুরস্কার, মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার ইত্যাদি। তিনি ১৯৯৯ সালের ২০ শে নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

জাগো তবে অরণ্য কন্যারা সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

এখানে জাগো তবে অরণ্য কন্যারা সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হয়েছে। আপনারা চাইলে এটি পড়েনিতে পারেন। পাঠ্য বই থেকে এই সৃজনশীল প্রশ্ন টি পড়তে পারবেন না। সেখানে এই প্রশ্ন দেওয়া নেই।

গ্রামে একসময় বলা যায় কোনো গাছই ছিল না। সারাদিন কাজ শেষে ক্লান্ত গ্রামবাসী বিশ্রামের জন্য কোনো গাছের ছায়া পাচ্ছে না দেখে কিশোর আফাজ উদ্দিন রাস্তার ধারে, বাজারের আশপাশে, খোলামাঠসহ আরও অনেক জায়গায় গাছ লাগাতে শুরু করেছিলেন। কিশোর বয়সের সে কাজটি বৃদ্ধ আফাজ উদ্দিন আজও করে যাচ্ছেন। তার ফলে বৃক্ষ গ্রাম নামে পরিচয় পেয়েছে আফাজ উদ্দিনের নাগরপুর।

ক. মাটি কীসের পানে চায়?
খ. মৌসুমি ফুলের গান কবির কণ্ঠে আর জাগে না কেন?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত আফাজ উদ্দিনের গ্রামের প্রথম অবস্থা জাগো তবে অরণ্য কন্যারা কবিতার কোন দিক নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ.“ আফাজ উদ্দিন যেন কবি সুফিয়া কামালের প্রত্যাশা পূরণে তৎপর।”-জাগো তবে অরণ্য কন্যারা কবিতার আলোকে মন্তব্যটির বিশেস্নষণ কর।

উত্তরঃ 

ক. মাটি অরণ্যের পানে চায়।

খ. কবির কণ্ঠে গান না জাগার কারণ হলো অবাধে বৃক্ষনিধনের ফলে চারদিকের হাহাকার আর শুষ্ক পরিবেশ।

পরিবেশের দৈন্যের কারণে কবির কণ্ঠে মৌসুমি ফুলের গান আর জাগে না। মানুষ প্রতিনিয়ত বৃক্ষনিধন করছে। দিনের পর দিন এ বৃক্ষনিধন বেড়েই চলছে। চারদিকে অবাধ বৃক্ষনিধনের কারণে পরিবেশ আজ হুমকির সম্মুখীন। সবুজের সমারোহ ¤স্নান হয়ে গেছে। চারিদিকে শুধু রুক্ষতা আর শূন্যতা। কোথাও প্রাণের চিহ্ন নেই। এসব দেখে কবির মন হাহাকার করে ওঠে। তাই মৌসুমি ফুলের গান আর কবির কণ্ঠে জাগে না।

গ.

প্রকৃতির থেকে সবুজের বিলীন হয়ে যাওয়ার যে দিকটি জাগো তবে অরণ্য কন্যারা কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে তা উদ্দীপকেও বিদ্যমান।

আধিপত্যবাদী মানুষের লোভের কারণে প্রকৃতি আজ শ্রীহীন। প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল মানুষও আজ বিপন্ন।এ চিত্রই প্রকাশিত হয়েছে জাগো তবে অরণ্য কন্যারা কবিতায় এবং উদ্দীপকে। জাগো তবে অরণ্য কন্যারা কবিতার কবি প্রকৃতির রূপহীনতা দেখে মর্মাহত। বৃক্ষ নিধনের ফলস্বরূপ গোটা জীবজগতের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়েছে।

উদ্দীপকেও জীবজগৎ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের বিপর্যস্ত অবস্থার প্রমাণ পাওয়া যায়। কবিতার মতো উদ্দীপকেও বৃক্ষ নিধনই বিরূপ বাস্তবতা সৃষ্টির মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। উদ্দীপক ও কবিতা উভয় ক্ষেেত্র প্রকৃতি ধ্বংসের বিরূপ প্রতিক্রিয়াকেই তুলে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ উদ্দীপকে আফাজউদ্দিনের গ্রামের প্রথম অবস্থা প্রকৃতি থেকে সবুজের বিলীন হয়ে যাওয়ার দিকটিকেই নির্দেশ করে।

ঘ.

“আফজাল উদ্দিন যেন কবি সুফিয়া কামালের প্রত্যাশা পূরণে তৎপর।” -এ মন্তব্যটি সঠিক।

জাগো তবে অরণ্য কন্যারা কবিতায় কবি সুফিয়া কামাল অরণ্য কন্যাদের জাগরণ তথা প্রাকৃতিক পরিবেশের বিস্তত্মৃতির পরিবর্ধন কামনা করেছেন। এই প্রেরণাই অনুপ্রাণিত হয়ে কিশোর আফাজ উদ্দীন রাস্তার ধারে, বাজারের আশপাশে, খোলা মাঠসহ আরও অনেক জায়গায় গাছ লাগাতে শুরু করেছিলেন। কিশোর বয়সের সে কাজটি বৃদ্ধ আফাজ উদ্দিন আজও করে যাচ্ছেন। তার ফলে বৃক্ষগ্রাম নামে পরিচিতি পেয়েছে নাগরপুর।

জাগো তবে অরণ্য কন্যারা কবিতায় কবি আশা প্রকাশ করেছেন সবুজের বৃক্ষরে সমারোহের। ফুলে ও ফসলে পুনরায় পৃথিবী ভরে উঠলেই পৃথিবীতে জীবজগতের অস্তিত্বকে হুমকির মুখ থেকে ফিরিয়ে এনে স্বাভাবিক পরিবেশ প্রদান করা সম্ভব হবে। উদ্দীপকের আফাজ উদ্দিনও কবির মতো প্রাকৃতিক বিরূপ বাস্তবতা লড়্গ্য করে এর সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন। কবিতার মতোই সবুজের মাঝে সমাধান খোঁজার বাসনায় বনায়নের কাজে আত¥নিয়োগ করেন আফাজ উদ্দিন।

তাই উলিস্নখিত আলোচনার পরিপ্রেক্ষেিত বলা যায় যে, আফাজ উদ্দিন যেন কবি সুফিয়া কামালের প্রত্যাশা পূরণে তৎপর।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক ভালোলেগছে এবং এই পোস্ট থেকে নদীর স্বপ্ন কবিতার mcq ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম শিক্ষামূলক আরও পোস্ট পেতে আমার সাথেই থাকুন। অষ্টম শ্রেণির বাংলা ১ম পত্রের অনেক পোস্ট এই ওয়েবসাইটে শেয়ার করা হয়েছে। পোস্ট টি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

আরও দেখুনঃ

নদীর স্বপ্ন কবিতা- বুদ্ধদেব বসু। বাংলা ১ম পত্র ৮ম শ্রেণি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *