এখানে তৈলচিত্রের ভূত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া আছে। তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে লেখক কুসংস্কারের বিপরীতে বিজ্ঞানবুদ্ধির জয়কে প্রকাশ করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন মানুষকে যদি বিজ্ঞানচেতনা দিয়ে ঘটনা বিশেষণে উদ্বুদ্ধ করা যায়, তাহলে অন্ধবিশ্বাসের অন্তঃসারশূন্যতা ধার পড়ে। লেখক এ গল্পে নগেন চরিত্রের মধ্যে ভূত বিশ্বাসের স্বরূপ ব্যাখ্যা করেছেন। অন্যদিকে পরাশর ডাক্তারের মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক বিচার বুদ্ধি।
মৃত ব্যক্তির আত্মা ভূতে পরিণত হয় এরকম বিশ্বাস সমাজে প্রচলিত থাকায় নগেন বৈদ্যুতিক শককে ভুতের কাজ বলে সহজেই বিশ্বাস করেছে। পরাশর ডাক্তার সবকিছু যুক্তি দিয়ে বিচার করেন বলে তাঁর কাছে। বৈদ্যুতিক শকের বিষয়টি ধরা পড়েছে এবং তাঁর মাধ্যমেই নগেনের বিশ্বাস ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নিচে থেকে তৈলচিত্রের ভূত গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেখেনিন।
তৈলচিত্রের ভূত সৃজনশীল প্রশ্ন
সৃজনশীল ১ঃ
সদ্য বিবাহিত মনির সাহেব নতুন বাসায় উঠলে পাশের বাসার হাশেম সাহেব বললেন, এ ঘরে ভূত আছে, রাতে নানান রকম শব্দ হয়, আপনি এ বাসায় কীভাবে থাকবেন?’ এসব শুনে তিনি ভয় পেয়ে যান। রাতে ঘুমাতে গিয়ে হাশেম সাহেবের কথার সত্যতা মেলে। পরদিন কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানতে পারেন ওপরের তলায় নানা বয়সি তিনটি বাচ্চা গভীর রাত পর্যন্ত খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে। এ শব্দগুলােকেই সবাই ভূত মনে করে ভয় পেত।
ক. কিছু পয়সা বাঁচানাের জন্য পরেশ বাপের ছবিতে কী এনে ছেড়েছে?
খ. “মিথ্যা গল্প বানিয়ে তাকে শােনাবার ছেলে যে নগেন নয়’ব্যাখ্যা করাে।
গ. উদ্দীপকের হাশেম সাহেবের সাথে তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. “উদ্দীপকের মনির সাহেব এবং তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার বিজ্ঞানমনস্ক ব্যক্তি।”- বিশ্লেষণ করাে।
সৃজনশীল ২ঃ
একজন লােক মেলায় লাল-সবুজ-হলুদ ইত্যাদি অনেক রঙের বেলুন বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। বিক্রি কমে গেলে সে হিলিয়াম গ্যাসে ভর্তি বেলুন আকাশে উড়িয়ে দিত এবং এতে করে তার বিক্রি বেড়ে যেত। একদিন একটি বাচ্চা ছেলে জিজ্ঞেস করল, “কালাে রঙের বেলুনও কি আকাশে উড়বে?” উত্তরে লােকটি বলল, “ভাই, রঙের জন্য বেলুন আকাশে ওড়ে না, ভেতরের গ্যাস বেলুনকে আকাশে ওড়ায়।”
ক. একটু থেমে পরাশর ডাক্তার আবার কী বললেন?
খ. “কপাল ভালাে তড়িতাহত হয়ে প্রাণে মরতে হয়নি।”- উক্তিটি কেন করেছিলেন তা বর্ণনা করাে।
গ. উদ্দীপকের ছেলেটির “কালাে রঙের বেলুনও কি আকাশে উড়বে?” উক্তিটি তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের কোন বিষয়কে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. “ভাই, রঙের জন্য বেলুন আকাশে ওড়ে না, ভেতরের গ্যাস বেলুনকে আকাশে ওড়ায়।” —উক্তিটি তৈলচিত্রের ভূত গল্পের মূলভাবকে প্রতিনিধিত্ব করে কি? তােমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল ৩ঃ
রফিক সাহেব শীতের ছুটিতে ভাগ্নি সাহানাকে নিয়ে গ্রামে বেড়াতে যান। রাতের আকাশ দেখার জন্য তারা খােলা মাঠে যান। অদূরেই দেখতে পান মাঠের মধ্যে হঠাৎ এক প্রকার আলাে জ্বলে উঠে তা সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা কিসের আলাে তা জানতে চাইলে সাহানার মামা বলেন, ভূতের! সাহানা ভয় পেয়ে তার মামাকে জড়িয়ে ধরে। মামা তখন তাকে বুঝিয়ে বলেন যে, খােলা মাঠের মাটিতে এক প্রকার গ্যাস থাকে- যা বাতাসের সংস্পর্শে এলে জ্বলে ওঠে। সাহানা বিষয়টা বুঝতে পেরে স্বাভাবিক হয়।
ক. তৈলচিত্রের ভূত’ কোন জাতীয় রচনা?
খ. নগেনকে পরাশর ডাক্তার ভৎসনা করলেন কেন?
গ. উদ্দীপকের সাহানা আর তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের নগেনের বিশেষ মিল কোথায়? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. “রফিক সাহেব আর তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার উভয়কে আধুনিক মানসিকতার অধিকারী বলা যায়?” উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করাে।
তৈলচিত্রের ভূত সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক। কিছু পয়সা বাঁচানাের জন্য পরেশ রূপের ছবিতে ভূত এনে ছেড়েছে।
খ। পরাশর ডাক্তার নগেনকে ভালােভাবে চিনতেন এবং জানতেন বলেই তিনি বিশ্বাস করতেন নগেন মিথ্যে ও বানােয়াট গল্প শােনানাের ছেলে নয়— প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি দ্বারা এ বিষয়টিই বােঝানাে হয়েছে।নগেন পরাশর ডাক্তারের পূর্ব পরিচিত ছিল। তিনি নগেনকে ভালােভাবে জানতেন বলেই নগেনের আচরণ সম্পর্কে তার স্পষ্ট ধারণা ছিল। তাই নগেন ভূতে ভয় পাওয়ার কথা বললে পরাশর ডাক্তার বুঝতে পারেন নগেন বানানাে কোনাে গল্প তাকে বলছে না। কেননা মিথ্যে ও বানােয়াট গল্প শােনাবার ছেলে নগেন নয়।
গ।
উদ্দীপকের হাশেম সাহেবের সাথে তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের নগেন চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে।
তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে নগেন তার মৃত মামার ছবিতে প্রণাম করতে গিয়ে বৈঁতিক শক খায়। বৈদ্যুতিক শক সম্পর্কে ধারণা না থাকায় সে এটিকে ভূতের কাজ ভেবে ভীষণ ভয় পায়। সে মনে করে মৃত মামার প্রেতাত্মাই তাকে ভয় দেখাচ্ছে।
উদ্দীপকের হাশেম সাহেব লােকসমাজে প্রচলিত ভূত সম্পর্কিত বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত। পাশের বাসায় রাতে নানা রকম শব্দকে তিনি ভূতের কাজ ভেবে ভুল করেন। এমনকি সেই বাড়ির নতুন ভাড়াটিয়া মনির সাহেবকে ভূত সম্পর্কে সতর্ক করেন। আলােচ্য গল্পের নগেনও বৈদ্যুতিক শককে মামার প্রেতাত্মা বা ভূতের কাজ ভেবে ভয় পায়। অর্থাৎ ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাসের দিক থেকে উদ্দীপকের হাশেম সাহেবের সাথে আলােচ্য গল্পের নগেন চরিত্রের মিল রয়েছে।
ঘ|
“উদ্দীপকের মনির সাহেব এবং তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার বিজ্ঞানমনস্ক ব্যক্তি”- মন্তব্যটি যথার্থ।
তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার একজন যুক্তিবাদী মানুষ। সমাজের প্রচলিত কুসংস্কারকে তিনি বিজ্ঞানের নিরিখে বিচার করেছেন। নগেন ভূতের ভয় পেয়ে তার শরণাপন্ন হলে তিনি নগেনকে ভয়ের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে অবহিত করেন। ফলে নগেন শকামুক্ত হয় ।
উদ্দীপকের মনির সাহেব নতুন বাসায় উঠলে পাশের বাসার হাশেম সাহেব তাকে ভূত সম্পর্কে সতর্ক করেন। এ কথা শুনে প্রথমে কিছুটা ভয় পেলেও মনির সাহেব প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে প্রবৃত্ত হন। পরে তিনি আবিষ্কার করেন ওপরের তলার বাচ্চারা গভীর রাত পর্যন্ত খেলাধুলা করে। মূলত এই শব্দগুলােকেই মানুষ ভূতের কাজ মনে করে ভয় পেত। তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার এবং উদ্দীপকের মনির সাহেব উভয়ই যুক্তিবাদী মানুষ। প্রচলিত ধারণার স্রোতে তারা গা ভাসাননি; বরং ঘটনার মূল অনুসন্ধান করে তারা প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করেছেন।
আলােচ্য গল্পে দেখা যায়, পরাশর ডাক্তার বিজ্ঞানমনস্ক বিচারবুদ্ধি দিয়ে নগেনের ভূত বিশ্বাসকে ভুল প্রমাণিত করেছেন। বিজ্ঞানের নিরিখে প্রকৃত সত্য তুলে ধরে নগেনকে শঙ্কামুক্ত করেছেন। উদ্দীপকের মনির সাহেবও মানুষের দীর্ঘদিনের কুসংস্কার বা অন্ধবিশ্বাসের সত্যতা উন্মােচন করেছেন। উপযুক্ত আলােচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক। একটু থেমে পরাশর ডাক্তার আবার বললেন, ভূত বলে কিছু নেই, নগেন।
খ| বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়ায় পরাশর ডাক্তার প্রশ্নোত্ত উক্তিটি করেছিলেন।তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে নগেন কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানসিকতার কারণে বৈদ্যুতিক শককে ভূতের কাজ বলে মনে করেছিল। আর বিজ্ঞানমনস্ক পরাশর ডাক্তার নগেনের এরূপ ভ্রান্ত ধারণার কারণ উদ্ঘাটন করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন না বৈদ্যুতিক শকের কথা। তাই দেওয়ালে টানানাে ছবির রূপার ফ্রেমে হাত দিয়ে তড়িতাহত হন। বৈদ্যুতিক শকের এই বিষয়টি বুঝতে পেরে পরাশর ডাক্তার প্রশ্নোত্ত উক্তিটি করেছেন।
গ।
উদ্দীপকের ছেলেটির “কালাে রঙের বেলুনও কি আকাশে উড়বে?” উক্তিটি তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের নগেনের বিজ্ঞানমনস্ক মানসিকতার অভাবের বিষয়টিকে নির্দেশ করে।
তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের নগেনের মাঝে বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাধারার অনুপস্থিতি লক্ষণীয়। সে কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানসিকতার অধিকারী। ফলে মামার তৈলচিত্র খুঁয়ে প্রণাম করতে গিয়ে বৈদ্যুতিক শককে ভূতের কাজ ভেবে ভুল করে। বারবার তড়িতাহত হয়েও সে বুঝতে পারে না আসল রহস্য। তড়িতাহত হয়ে ভূতের কাজ বলে মনে করার মধ্য দিয়ে নগেনের মনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানসিকতা এবং বিজ্ঞানমনস্ক চেতনার অভাবের দিকটিই প্রতিভাত হয়ে উঠেছে।
উদ্দীপকের ছেলেটির মাঝে বিজ্ঞানমনস্ক বিচারবুদ্ধির অভাব লক্ষ করা যায়। সে হিলিয়াম ভর্তি বেলুন আকাশে ওড়ার বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেনি। তার কাছে মনে হয়েছে বিভিন্ন রঙের বেলুন আকাশে উড়ে যাচ্ছে ভিন্ন কোনাে কারণে। তাই তাে ছেলেটি বেলুন বিক্রেতার কাছে জানতে চেয়েছে কালাে রঙের বেলুনও আকাশে ওড়ে কিনা। বেলুন বিক্রেতার কাছে শুনে সে বুঝতে পেরেছে বেলুন রঙের কারণে নয় বরং হিলিয়াম গ্যাসের কারণে আকাশে ওড়ে। উদ্দীপকের ছেলেটির এই ভুল ধারণার বশবর্তী হওয়ার দিকটি বিজ্ঞানমনস্কতার অভাব, যা, তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের নগেনের মানসিকতার বিষয়টিকেই নির্দেশ করে।
ঘ।
তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে প্রকাশিত বিজ্ঞানবুদ্ধি জয়ের দিকটি প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটিতেও ফুটে ওঠায় তা গল্পের মূলভাবকে প্রতিনিধিত্ব করে।
আলােচ্য গল্পে মানুষের মধ্যে বিরাজমান কুসংস্কারের বিপরীতে বিজ্ঞানবুদ্ধির জয় ঘটেছে। সেখানে নগেনের ভূত বিশ্বাসের রহস্য উন্মােচনের মাধ্যমে গল্পকার দেখিয়েছেন বিজ্ঞানচিন্তা মনের মধ্যে থাকলে তা কুসংস্কারকে দূর করতে পারে। গল্পের বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ পরাশর ডাক্তার নগেনের মনের ভূতের ভয় দূর করেছে। সে মনে করে ভূত বলে কিছু নেই। সবই মানুষের অলীক ধারণা। আর এই বিজ্ঞানচেতনার দিকটিই তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের প্রধান দিক।
উদ্দীপকে বেলুন বিক্রেতার মন্তব্যের মধ্যে বিজ্ঞানচিন্তার প্রকাশ লক্ষণীয়। সে ভুল ধারণার বশবর্তী ছেলেটির মনের ভ্রান্ত ধারণা দূর করে দিয়েছে। লােকটি হিলিয়াম গ্যাস ভর্তি বেলুন আকাশে উড়িয়ে দিত বিক্রি বৃদ্ধির জন্য। আর এই বেলুন উড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনাে অলৌকিকত্ব যে নেই তা কৌতূহলী ছেলেটি বুঝতে পারে না। সে ভাবে রঙের কারণেই বােধহয় বেলুন আকাশে ওড়ে। ছেলেটির এই ধারণার বিপরীতে প্রশ্নোত মন্তব্যটি বেলুন বিক্রেতার বিজ্ঞানচিন্তার দিকটিকে তুলে ধরেছে।
তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে পরাশর ডাক্তারের মাঝে যেমন বৈজ্ঞানিক চিন্তাচেতনার প্রকাশ লক্ষ করা যায়, তেমনি উদ্দীপকের বেলুন বিক্রেতার মাঝেও তার প্রকাশ লক্ষণীয়। আর এই বিজ্ঞানচিন্তার দিকটিই আলােচ্য গল্পের মূল প্রতিপাদ্য। বিজ্ঞানচিন্তার কারণেই বেলুন বিক্রেতা বলেছে, “ভাই, রঙের জন্য বেলুন আকাশে ওড়ে না, ভেতরের গ্যাস বেলুনকে আকাশে ওড়ায়। তাই বলা যায়, প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের মূলভাবকে প্রতিনিধিত্ব করে।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক। ‘তৈলচিত্রের ভূত’ কিশাের উপযােগী একটি ছােটগল্প।
খ। নগেনের বােকামির কারণে পরাশর ডাক্তার নগেনকে ভৎসনা করলেন।
নগেন তার মামার তৈলচিত্রে হাত দিয়ে বৈদ্যুতিক শক খাওয়ার পরে কোনাে রকম যুক্তি দিয়ে বিচার না করে সে এটাকে ভূতের কাজ মনে করে। সে পরাশর ডাক্তারের কাছে এর সমাধানের জন্য যায়। কিন্তু তৈলচিত্রটি যে রুপার ফ্রেমে বাঁধা এবং বৈদ্যুতিক সংযােগ আছে তা সে বলে না। পরাশর ডাক্তার রাতের অন্ধকারে তৈলচিত্রটি স্পর্শ করলে তিনিও বৈদ্যুতিক শক খান। তখন তিনি সামান্য বৈদ্যুতিক শক না বােঝার জন্য এবং রুপার ফ্রেমে বৈদ্যুতিক সংযােগের কথা না বলার জন্য নগেনকে ভৎসনা করেন।
গ।
অশরীরী শক্তির উপর বিশ্বাস এবং তা থেকে উত্তরণের দিক থেকে ।
উদ্দীপকের সাহানা আর তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের নগেন চরিত্রের মিল রয়েছে। তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে নগেন তার মামার ছবিতে হাত দিয়ে বৈদ্যুতিক শক খেয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে তার মনে ভ্রান্ত ধারণা ছিল। তাই সে ধরেই নিয়েছিল মামার মৃত্যুর পর তার প্রেতাত্মা তাকে ভয় দেখাচ্ছে। অবশেষে পরাশর ডাক্তারের সহায়তায় তার এ ভ্রান্তি দূর হয়।
উদ্দীপকে রাতে মাঠে ঘুরতে গিয়ে মামার কথায় বিভ্রান্ত হয়ে সাহানা ভয় পেয়েছে। ভূতের ভয়ে সে মামাকে জড়িয়ে ধরে। তবে শেষ পর্যন্ত তার মামার কথাতেই সে ভুল বুঝতে পেরে স্বাভাবিক হয়েছে। যেমনটি নগেনের ক্ষেত্রেও ঘটেছে। সাহানার মামা এবং গল্পের পরাশর ডাক্তার বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে সমস্যার কারণ তুলে ধরেছেন, ফলে সাহানা ও নগেন সঠিক ধারণা পেয়েছে। এদিক থেকে উদ্দীপকের সাহানা ও তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের নগেনের মধ্যে বিশেষ মিল লক্ষ করা যায় ।
ঘ।
বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা-চেতনার দিক থেকে উদ্দীপকের রফিক সাহেব এবং তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তারকে আধুনিক মানসিকতার অধিকারী বলা যায় ।
তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে নগেন ভূতের ভয় পেয়ে পরাশর ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। তিনি তাকে ভয়ের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে অবহিত করেন। ফলে নগেন শঙ্কামুক্ত হয়।
উদ্দীপকের সাহানা ভূতের ভয় পেলে তার মামা তাকে মাঠে আগুন জ্বলে ওঠার প্রকৃত কারণ ব্যাখ্যা করেন। এতে সাহানা আশ্বস্ত হয় এবং তার ভূতের ভয় কেটে যায়। উদ্দীপকের রফিক সাহেব ও তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার উভয়ই যুক্তিবাদী মানুষ। পরাশর ডাক্তার নগেনকে তার মামার ছবিতে কেন বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। রফিক সাহেবও সাহানার ক্ষেত্রে একই কাজ করেন। আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে ভূত-প্রেতের মতাে কাল্পনিক কোনাে বিষয়ে বিশ্বাস করা রফিক সাহেব কিংবা পরাশর ডাক্তারের চরিত্রে নেই। তারা বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে এসব ঘটনা বিচার করেছেন। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে তাদের দুজনকে আধুনিক মানসিকতার অধিকারী বলা যায়।
শেষ কথা
আশা করছি এই পোস্ট আপনাদের ভালোলেগেছে এবং এখান থেকে তৈলচিত্রের ভূত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর PDF সংগ্রহ করতে পেরেছেন। যাদের কঠিন শব্দ গুলো বুঝতে অসুবিধা হয়েছে, তারা উপরের অংশ থেকে শব্দার্থ গুলো পড়ে নিবেন। এই রকম শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য পেতে আমার সাথেই থাকুন।
আরও দেখুনঃ
তৈলচিত্রের ভূত -মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। ৮ম শ্রেণি